ছাত্র নির্যাতনের ঘটনাগুলোর বিচার হওয়া জরুরি : রাবি উপাচার্য

ছাত্র নির্যাতনের ঘটনাগুলোর বিচার হওয়া জরুরি : রাবি উপাচার্য

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকিব বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ক্যাম্পাসে ছাত্র নির্যাতন অতীতের সবকিছুকে ছাড়িয়েছে। টার্গেট করে ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ডেকে এনে বা ধরে এনে বিশেষ কক্ষে রাতভর নির্যাতন করা হয়েছে। এমনকি মেরে ফেলার মতো জঘন্য কাজও হয়েছে। এসবের যথাযথ বিচার হওয়া জরুরি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকিব বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ক্যাম্পাসে ছাত্র নির্যাতন অতীতের সবকিছুকে ছাড়িয়েছে। টার্গেট করে ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ডেকে এনে বা ধরে এনে বিশেষ কক্ষে রাতভর নির্যাতন করা হয়েছে। এমনকি মেরে ফেলার মতো জঘন্য কাজও হয়েছে। এসবের যথাযথ বিচার হওয়া জরুরি।

সোমবার (৭ অক্টোবর) রাতে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘সোচ্চার – টর্চার ওয়াচডগ বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক অনলাইন ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক ড. সালেহ বলেন, বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস অনেক লম্বা। আশি ও নব্বই দশকে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হরহামেশাই সংঘর্ষ হতো। এইসব সংঘর্ষে অনেক ছাত্র আহত ও নিহত হয়েছে। তবে সেগুলো প্রধানত ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ। সেইসব সংঘর্ষ ও গত পনেরো বছরে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তার চরিত্রে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।

উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই এসব ঘটনায় চুপ থেকেছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অভিভাবকও এসব ঘটনায় চূড়ান্ত খারাপ না ঘটার আগ পর্যন্ত কোনো ধরনের কথা বলেননি। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক নিয়োগে মেধার বদলে দলীয়করণ বেশি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে ন্যায়নিষ্ঠ, নীতিবান, যোগ্য লোককে আনা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডিতে যারা ছিলেন তাদের কাজই ছিল ক্ষমতাসীন ছাত্র রাজনীতির নেতাদের অপকর্মকে আড়াল করা।

ওয়েবিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্র নির্যাতনের ইতিহাস প্রায় দীর্ঘ ৫০ বছরের, কিন্তু সেগুলো সুনির্দিষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়নি।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন ২০১৯ সালে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করা বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। তিনি বলেন, শুধু আবরার ফাহাদ নয়, সারা দেশের সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলো ভয়াবহ ঘটনা পাওয়া যাবে। এগুলোর সঠিক নথিভুক্তকরণ ও বিচার জরুরি। তা না হলে এসব ঘটনা পুনরায় ফিরে আসবে।

ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য রাখেন- মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সভাপতি অধ্যাপক ড. সি আর আবরার, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও মানবাধিকার সংগঠন এইচআরএসএসের প্রধান উপদেষ্টা নূর খান লিটন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শেহরিন আমিন ভূঁইয়া, মানবাধিকার আইনজীবী ও সোচ্চারের লিগ্যাল ডিরেক্টর ব্যারিস্টার শাইখ মাহদি।

এই ওয়েবিনারে সোচ্চার ক্যাম্পাস নির্যাতন নিয়ে করা গবেষণার প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে নির্যাতিত ৫০ জন শিক্ষার্থীর সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

আরএইচটি/এমজে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *