ভারতে সিরিজ চলাকালে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ইতি টানার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। ঘরের মাটিতে আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে খেলে লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে আগ্রহ প্রকাশ করেন দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় এই তারকা। তবে নিরাপত্তার প্রশ্নে তার দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখে দিয়েছে।
ভারতে সিরিজ চলাকালে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ইতি টানার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। ঘরের মাটিতে আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে খেলে লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে আগ্রহ প্রকাশ করেন দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় এই তারকা। তবে নিরাপত্তার প্রশ্নে তার দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখে দিয়েছে।
দেশে ফিরতে এবং পুনরায় দেশ ছাড়তে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন সাকিব। টাইগার এই অলরাউন্ডারের নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বল ঠেলে দিয়েছে সরকারের কোর্টে। সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি চান সাকিব আল হাসানের মতো একজন ক্রিকেটার দেশের মাটিতে খেলেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান। দেশে খেলতে এলে সাকিবকে পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
ক্রীড়া উপদেষ্টার আশ্বাস বানীর পরই ইতিবাচক মন্তব্য করলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদও। গতকাল (সোমবার) মিরপুরে বোর্ড সভা শেষে বিসিবি সভাপতি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমার সাথে সাকিবের যোগাযোগ হয়েছে। যেহেতু সে ঘরের মাঠে খেলে টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায় নিতে চায়, আমি মনে করি এক্ষেত্রে তার ভালো সুযোগ রয়েছে।’
এই মুহূর্তে সাকিব ইউএস ন্যাশনাল টি১০ লিগ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষে তিনি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন। সাকিবের নিরাপত্তার প্রশ্নে ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘দায়িত্বটা সরকারের, আমি তো একটা ছোট মানুষ, বোর্ড প্রেসিডেন্ট। আমার হাতে ক্ষমতা খুব কম। সাকিবের ব্যাপারটা পুরোপুরি সরকারি পর্যায় থেকে আসতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আছে, উপদেষ্টা আছেন, প্রধান উপদেষ্টা আছেন। তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’
তবে বিসিবি সভাপতি আশ্বস্ত করেছেন, মিরপুরে সাকিবের নিরাপত্তার বিষয়টি তারা দেখবেন, ‘আমাদের যতটুকু ক্ষমতা তার মধ্যে ও ইনডোরে যাবে, মাঠে খেলবে, প্র্যাকটিস মাঠে যাবে। স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা দায়িত্বটা নেওয়া আমাদের জন্য খুব সহজ। এটা আমরা নিতে পারব।’
দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে ফেরা নিয়ে সাকিবের কিছু ‘ঝামেলা’ আছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার একটি মামলার আসামি তিনি। দেশে ফিরলে গ্রেপ্তার বা অন্যভাবে হয়রানির একটা শঙ্কা আছে। এ কারণে অবসর ঘোষণার সময় সাকিব বলছিলেন, ‘আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোনো সমস্যা না হয়। বোর্ড খেয়াল রাখছে, বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবেন, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারব।
দেশের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানো প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘আমার কাছে দেশের সমর্থকদের সামনে টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করাটা উপযুক্ত হবে বলে মনে হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে এবং এই ফরম্যাটের শেষটা আমি ঘরের মাঠেই করতে চাই। আমি বিসিবির কাছে নিজের শেষ টেস্টটি মিরপুরে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছি। যদি তা না হয়, তাহলে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিই আমার শেষ টেস্ট হবে।’
আগামী ১৬ অক্টোবর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসবে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২১ অক্টোবর থেকে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট ও ২৯ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রামে শুরু হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।
এফআই