‘স্নিগ্ধা এতিম হয়ে গেল, আমার প্রতিটা মুহূর্ত কীভাবে কাটবে’

‘স্নিগ্ধা এতিম হয়ে গেল, আমার প্রতিটা মুহূর্ত কীভাবে কাটবে’

খুলনায় আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নিহত পুলিশ কনস্টেবল সুমন কুমার ঘরামীর স্ত্রী মিতু বিশ্বাসের আহাজারি থামছে না। স্বামীকে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন আর বিলাপ করছেন তিনি। তার আর্তনাদে পরিবারের অন্য সদস্যরাও আহাজারি করছেন। আর ৬ বছরের একমাত্র কন্যা স্নিগ্ধা তার নানার কোলে বসে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে চেয়ে দেখছে। মাঝে মধ্যে কাঁদছে।  

খুলনায় আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নিহত পুলিশ কনস্টেবল সুমন কুমার ঘরামীর স্ত্রী মিতু বিশ্বাসের আহাজারি থামছে না। স্বামীকে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন আর বিলাপ করছেন তিনি। তার আর্তনাদে পরিবারের অন্য সদস্যরাও আহাজারি করছেন। আর ৬ বছরের একমাত্র কন্যা স্নিগ্ধা তার নানার কোলে বসে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে চেয়ে দেখছে। মাঝে মধ্যে কাঁদছে।  

শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সের নিহত সুমনের মরদেহ গার্ড অব অনারের পূর্ব মুহূর্তে এমন পরিস্থিতির দেখা মেলে।

নিহত পুলিশ কনস্টেবল সুমন কুমার ঘরামীর স্ত্রী মিতু বিশ্বাস আহাজারি করতে করতে বলেন, আমার স্নিগ্ধা এতিম হলে গেল। আমার প্রতিটা মুহূর্ত কিভাবে কাটবে তারে (সুমনকে) ছাড়া। 

পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ও স্যার আমার স্বামী ঠিকমতো ডিউটি করেছে। সে কোনও ফাঁকি মারে না।  

মিতু বলেন, আমার স্বামী ফোনে বলেছে, ও মিতু তুমি খেয়ে নিও, আমি কোনও সময় আসবো জানি না। আক্রমণ শুরু হইছে, তুমি খেয়ে নিও। আমি বসে আছি ভাত নিয়ে তুমি আসো বলে কান্না করছিলেন সুমনের স্ত্রী।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মিতু বলেন, আমার স্বামীকে কেন মারলো। শুনেছি আমার স্বামী পালিয়েছিল, তাকে দেখিয়ে দিয়েছিল। যারা মেরেছে তারা শান্তি পাবে না।  

নিহত সুমনের চাচাতো ভাই বিদ্যুৎ হাওলাদার আক্ষেপ করে বলেন, আমার ভাই চলে গেছে, ভাইকে তো আর পাওয়া যাবে না।  

গার্ড অব অনার শেষে পরিবারের কাছে সুমনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পরিবারের সদস্যরা সুমনের মরদেহ শেষকৃত্য করার জন্য বাগেরহাটের কচুয়ায় নিয়ে যায়।  

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সুমন কুমার ঘরামী শহীদ হয়েছেন। ছাত্রদের আড়ালে মুখোশধারীরা পুলিশকে হত্যা করেছে। তারা সরকারি সম্পদ ধ্বংস করেছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করা আমাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। এই দায়িত্ব আমরা অবশ্যই পালন করবো।

মোজাম্মেল হক আরও বলেন, আহত ২১ জন সদস্যের মধ্যে দুজন আইসিইউতে রয়েছেন। প্রস্তুত হয়েই সন্ত্রাসীরা আমাদের পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে। আমার ভাইকে যারা পিটিয়ে হত্যা করেছে তাদের ভিডিও, ছবি পাওয়া গেছে। তাদের নাম পরিচয় খুঁজে বের করা হচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তার করে আইনে সোপর্দ করা হবে।

তিনি বলেন, নিহতের পরিবারকে তাৎক্ষণিক এক লাখ টাকা এবং মরদেহ সৎকারে আরও ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ মহাপরিদর্শকের পক্ষ থেকে আট লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং নগদ দুই লাখ টাকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য করা হবে। সুমনের পরিবারে কেউ শিক্ষিত থাকলে এবং পুলিশে চাকরির উপযোগী হলে তাকে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। কেএমপি আজীবন পরিবারটির পাশে থাকবে।

এর আগে শুক্রবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় সংঘর্ষ চলাকালে আন্দোলনকারীদের পিটুনিতে সুমন কুমার ঘরামী নিহত হন। তার বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নগরীর বয়রা এলাকায়। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন। 

এমএসএ 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *