পুড়ে যাওয়া ধানমন্ডি-৩২ এর ধ্বংসযজ্ঞ দেখতে মানুষের ভিড়

পুড়ে যাওয়া ধানমন্ডি-৩২ এর ধ্বংসযজ্ঞ দেখতে মানুষের ভিড়

রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর’ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভেতরের সংরক্ষিত প্রায় সব আসবাবপত্রই পুড়ে গেছে।

গতকাল (৫ আগস্ট) দুপুরে দুর্বৃত্তরা এই বাড়িতে আগুন দেয়। পরে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের ভেতর থেকে চারজনের পুড়ে যাওয়া মরদেহ পাওয়া গেছে। জাদুঘরের সামনে ফুটপাতে লাশগুলো পড়েছিল।

তাছাড়া আজ দিনভর এই বাড়ি ঘিরে ছিল উৎসুক মানুষের ভিড়। সরেজমিনে দেখা গেছে, জাদুঘরের ধ্বংসাবশেষ দেখতে অনেকে সেখানে ভিড় করছেন। আবার অনেককেই সেখান থেকে অবশিষ্ট মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যেতেও দেখা গেছে।

আগুনের বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, গতকাল দুপুরে দুর্বৃত্তরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে আগুন দেন। এরপর দীর্ঘসময় আগুনে পুড়লেও নেভানোর জন্য কোন ব্যবস্থা করা হয়নি।

স্থানীয়রা ধারণা করছেন, লাশগুলো নিরাপত্তারক্ষী বা বহিরাগতদের হতে পারে, যারা জাদুঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর সেখান থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র নেওয়ার চেষ্টা করছিল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর থেকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের এই বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। ১৯৬২ সালের আইয়ুববিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ৭০ সালের নির্বাচন ও ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলনসহ যুদ্ধের প্রথম উত্তাল দিনগুলোতে তিনি এ বাড়িতে বসেই সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা ও রাজনৈতিক বিভিন্ন মিটিং তিনি এখানেই করতেন। এই বাড়ি থেকেই পাকিস্তানি সৈন্যরা তাকে অসংখ্যবার গ্রেপ্তার করে।

স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে তিনি এখান থেকেই তার রাষ্ট্রীয় কর্মপরিচালনা করতেন। শেষ পর্যন্ত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে সপরিবারে এই বাড়িতেই প্রাণ দিতে হয়।

তারপর ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছে বাড়িটি হস্তান্তর করা হয়। শেখ হাসিনা ১৯৯৩ সালে বাড়িটিকে জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে ট্রাস্ট বাড়িটিকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরিত করে। ১৯৯৪ সালের ১৪ আগস্ট জাদুঘরটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

আরএইচটি/এসকেডি

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *