বান্দরবানে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের বিপুল সম্পদের খোঁজ 

বান্দরবানে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের বিপুল সম্পদের খোঁজ 

বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের বিপুল সম্পদের খোঁজ মিলেছে। ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রশাসনের সহায়তায় জালিয়াতি করে স্ত্রী ফৌজিয়া ইসলামের নামে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে ক্রয় করেছেন ১০০ একরেরও বেশি জায়গা। শুধু তাই নয়, প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছেন ৫০০ একরের মতো জায়গা।

বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের বিপুল সম্পদের খোঁজ মিলেছে। ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রশাসনের সহায়তায় জালিয়াতি করে স্ত্রী ফৌজিয়া ইসলামের নামে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে ক্রয় করেছেন ১০০ একরেরও বেশি জায়গা। শুধু তাই নয়, প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছেন ৫০০ একরের মতো জায়গা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে যাতায়াতের জন্য রাস্তা, বৈদ্যুতিক সংযোগ, সীমানা পিলার, মাছের প্রজেক্ট, গবাদিপশুর খামারসহ তৈরি করা হয়েছে বাংলোবাড়ি। এসব সম্পত্তি দেখাশুনার জন্য রাখা হয়েছে কেয়ারটেকার।

এদিকে স্থায়ী বাসিন্দা ছাড়া পার্বত্য এলাকায় জায়গা ক্রয়ের বিধান না থাকলেও প্রভাব খাটিয়ে সরই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সম্পূর্ণ জালিয়াতির মাধ্যমে ফৌজিয়া ইসলামের নামে সম্পন্ন করা হয়েছে এসব জায়গার রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম। ভূমি অফিসের রেকর্ড রুমে তার নামে রয়েছে অসংখ্য জায়গার জমাবন্দি। সম্প্রতি এসব জায়গার কাগজ দিয়ে নিজ নামে নিয়েছেন রাজার সনদও।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাজুল ইসলাম ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দখল করে নিয়েছেন আশপাশের অসংখ্য গরিব ও অসহায় মানুষের জায়গা। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো ভয়ে এসব কথা বলতে পারেনি। মামলার ভয়ে দীর্ঘদিন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিল এসব পরিবার। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন হলে এলাকায় ফিরতে শুরু করেন মামলার ভয়ে পালিয়ে থাকা বাসিন্দারা।

সরই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল ছবুর বলেন, আমাদেরকে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের লোকজন বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছে। আমাদের জায়গাজমি জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়েছিলাম। সরকার পতন হওয়ার পর আমরা নিজ বাড়িতে এসেছি। আমরা আমাদের জায়গা ফেরত চাই এবং দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

সরই এলাকার আরেক বাসিন্দা হালিমা খাতুন বলেন, আমার স্বামী ও ছেলেকে মন্ত্রী তাজুল ইসলামের ভাড়াটিয়া লোকজন মামলা দিয়েছে। এলাকায় থাকতে দেয়নি। আমরা নিজেদের জমিতে চাষ করতে পারিনি। এমনকি ভয়ে কোনো প্রতিবাদও করতে পারিনি। স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যানদের কাছে বিচার চেয়েও পাইনি।

পার্বত্য বান্দরবান জেলায় জায়গা ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়ে বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অ্যাডভোকেট আবু জাফর বলেন, এর আগেও এ ধরনের অনেক ঘটনা ঘটেছে। সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদও অবৈধভাবে প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে জায়গা ক্রয় করেছিলেন। একের পর এক এ ধরনের ঘটনা ঘটার পরও দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। তাই পার্বত্য এলাকায় অবৈধভাবে জায়গা ক্রয়ের বিষয়ে যারা সহযোগিতা করছে প্রশাসনের এসব অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। স্মারকলিপিটি সচিব,  প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। নির্দেশনা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মো. শহীদুল ইসলাম/এমজেইউ 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *