রাজবাড়ীতে পুলিশের স্লোগান— আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না

রাজবাড়ীতে পুলিশের স্লোগান— আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও প্রাণহানি হয়। থানা, ফাঁড়িসহ পুলিশের বেশ কিছু স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগও করা হয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সারা দেশে পুলিশি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।  

এরপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এলে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পুলিশ সদস্যরা তাদের দাবি পেশ করছেন। রাজবাড়ীতেও ১১ দফা দাবি জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সদস্যরা। পরিস্থিতির জন্য দোষী পুলিশের শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তারা। 

গতকাল জেলা পুলিশ লাইন্সে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বিগত ১৫ বছরে অধস্তন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিসিএস পুলিশ অফিসারদের বিভিন্ন অন্যায়ের কথা তুলে ধরে তাদের শাস্তি দাবি করেন। একই সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তার দাবি জানান তারা। ১১ দফা পূরণ না হওয়া অবধি ও পুলিশে সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত কাজে ফিরবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সে সময় তারা, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’,‘আমার ভাই মরলো কেন, জবাব চাই জবাব চাই,’ ‘পুলিশে সংস্কার এই মুহূর্তে দরকার’, ‘পুলিশ হবে জনতার যদি হয় সংস্কার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিক্ষোভে কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও কতিপয় দালালের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে আমাদের পুলিশ সদস্যরা ছাত্রদের ওপর গুলি করতে বাধ্য হয়। তাদের নির্দেশ পালন না করলে আমাদের চাকরি খেয়ে নিতো তারা। এই আন্দোলনে আমাদের অনেক পুলিশ সদস্যের ওপর নির্যাতন হয়েছে; যা মধ্যযুগীয় নির্যাতনকে হার মানিয়েছে। আমরা দেশবাসীর শত্রু হতে চাই না। আমরা জনগণের বন্ধু হতে চাই। আমরা তাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের হয়ে কাজ করতে চাই। রাজনৈতিক মন্ত্রী-এমপিদের কাছ থেকে সুবিধা পেয়ে অনেক দালাল পুলিশ অফিসার আমাদের যেমন খুশি যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করেছে। আমরা আর এসব দলাদলিতে থাকতে চাই না। 

অধস্তন পুলিশ সদস্যদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য দেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি. এম. আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, তোমাদের সামনে দাঁড়ানোর মতো সৎ সাহস আমার নেই। এই আন্দোলনের সময় তোমাদের যে ভাইরা নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে, যেভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে এগুলো কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব কি না আমার জানা নেই। নিশ্চয়ই তোমাদের দাবিদাওয়া সুনির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করবো, নিশ্চয় ভালো একটা ব্যবস্থা হবে। আমি তোমাদের সাথেই রয়েছি।  

এ সময় রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রেজাউল করিম, ডিবির ওসি মো. মনিরুজ্জামান খানা, ডিআইও-১ বিপ্লব দত্ত চৌধুরীসহ জেলা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এনএফ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *