যাকাত ব্যবস্থা কার্যকর হলে দারিদ্র্য জাদুঘর যাবে : আহমাদুল্লাহ

যাকাত ব্যবস্থা কার্যকর হলে দারিদ্র্য জাদুঘর যাবে : আহমাদুল্লাহ

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে যাকাত ব্যবস্থা কার্যকর হলে তিন বছরের মধ্যেই দারিদ্র্য দূর হয়ে জাদুঘরে চলে যাবে।

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে যাকাত ব্যবস্থা কার্যকর হলে তিন বছরের মধ্যেই দারিদ্র্য দূর হয়ে জাদুঘরে চলে যাবে।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদের মিলনায়তনে আয়োজিত সিরাত প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, দুই দশক পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবির হোসাইন বিভিন্ন ব্যাংকের তথ্যের ভিত্তিতে জরিপ চালিয়ে দেখেছেন, যদি ২০০১ সালে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে যাকাত আদায় করা হত তাহলে ৩০ হাজার কোটি টাকা যাকাত আদায় করা যেত। তিনি দ্বিতীয় বার একই পদ্ধতিতে ২০২১ সালে জরিপ পরিচালনা করেছেন, সেখানে দেখা যায় বাংলাদেশের মানুষের কাছে যত সম্পদ আছে তার যদি সঠিক যাকাত আদায় করা হয় তাহলে ১ লাখ কোটি যাকাত আদায় করা সম্ভব। এভাবেই যদি প্রতিবছর দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে যাকাত আদায় করা হয় তাহলে দেশে কোন দরিদ্র মানুষ থাকবে না।

তিনি বলেন, ধনীদের সম্পদে দরিদ্রদের অধিকার রয়েছে। এটা তাদের অধিকার, তাদের প্রাপ্য। কোনো বদান্যতা নয়, দান-অনুদান-অনুগ্রহের ব্যাপার নয়। যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা ধনসম্পদ দিয়েছেন, তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন দরিদ্রদের এই অধিকার আদায় করতে। আজ পৃথিবীতে দরিদ্র এবং দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে আহ্বান করতে দেখা যায়। অথচ চৌদ্দশ বছর আগে রাসূল (স.) সেই আহ্বান করেছিলেন। যা ছিল অনেক অগ্রসর, এক ধাপ এগিয়ে। তিনি দুস্থদের পাশে দাঁড়ানো ধনীদের জন্য ফরজ করে দিয়েছিলেন, এ কাজ তাদের জন্য অপরিহার্য করে দিয়েছিলেন।

তিনি আরো বলেন, হযরত ওমর (রা.) তার শাসনামলে যাকাত ব্যবস্থাপনা এত উন্নত করেছিলেন যে, যেই মক্কা-মদিনার মানুষরা সামান্য খাবারের জন্য হাহাকার করত, কোনো এক মৌসুমে যদি খেজুরের ফলন ভালে না হতো তাহলে তাদের দুর্ভিক্ষের সঙ্গে লড়ায় করতে হতো। সেই মক্কায় যাকাতের কল্যাণে মাত্র কয়েকবছরে ব্যবধানে যাকাত নেওয়ার লোক খুঁজে পাওয়া যেত না। তখন আরবরা আফ্রিকাতে যাকাত দিতেন।

চবি আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ক ম আবদুল কাদেরের সভাপতিত্বে সিরাত প্রতিযোগিতার পুরস্কার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এবং চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা রাসূল (স.) এর জীবনের ওপর আলোচনা করেন।

মিনার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত সিরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে ল্যাপটপ জিতেছেন চবির ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী জুনায়েদ সিপাহী, দ্বিতীয় হয়ে ট্যাব জিতেছেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রেহানুল ইসলাম এবং তৃতীয় হয়ে মোবাইল জিতেছেন ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ফখরুল ইসলাম।

ইসলামি ব্যাংক প্লেজেন্স সিরাত প্রতিযোগিতায় স্পন্সর হিসেবে ছিলেন আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতাল লিমিটেড। এছাড়া অনুষ্ঠানে সাইমুম ও আজাদী মঞ্চের শিল্পীরা গান পরিবেশন করেছেন।

আতিকুর রহমান/পিএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *