পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চৌদ্দ বছর বয়সী এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে চার কিশোর-তরুণের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তাদেরকে আটক করে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদালতে পাঠিয়ে দেয় তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে পুলিশ ও বিজিবির যৌথ অভিযানে তাদের বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চৌদ্দ বছর বয়সী এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে চার কিশোর-তরুণের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তাদেরকে আটক করে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদালতে পাঠিয়ে দেয় তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে পুলিশ ও বিজিবির যৌথ অভিযানে তাদের বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- নাহিদ হাসান (১৭), সাব্বির হোসেন (১৯), রেদওয়ান হোসেন রতন (১৭) ও মো.আব্দুল্লাহ (২০)। এদের মধ্যে নাহিদ হাসান তেঁতুলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দর্জিপাড়া (বাগানপাড়া) গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে, সাব্বির হোসেন একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে, রেদওয়ান হোসেন রতন দর্জিপাড়ার আব্দুল জলিলের ছেলে ও একই গ্রামের একই এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে আব্দুল্লাহ।
ধর্ষণের অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার ও ধর্ষণের মূল রহস্য উদঘাটন নিয়ে শনিবার বিকেলে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিং করেছেন।
পুলিশ সুপার জানান, গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে তেঁতুলিয়া বাজারে অবস্থান করেন ভুক্তভোগী ওই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরী। সেদিনই আব্দুল্লাহ তাকে ফুসলিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে দর্জিপাড়ার বুড়াঠাকুরের নামের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে দু’চালা টিনের ঘরে রাখে। পরের দিন শুক্রবার আব্দুল্লাহ তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর তাকে খাবার আনার কথা বলে রেখে পালিয়ে যায়।
একই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভুক্তভোগীকে ঘটনাস্থলে পেয়ে নাহিদ হাসান ও সাব্বির হোসেন আবার ধর্ষণ করে। পরে তারা ওই কিশোরীকে রেখে তার জন্য তেঁতুলিয়া বাজার থেকে খাবার নিয়ে আসার সময় রেদওয়ান হোসেন রতনের সঙ্গে দেখা হয়। তারা তিনজনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগীকে খাবার খাওয়ায়ে রতনের হাওলায় নাহিদ ও সাব্বির কৌশলে চলে যায়। পরে দুপুর ২টার দিকে রতন ওই নারীকে ধর্ষণ করে। এরপর রতন ওই নারীকে মাগুরা মোড় এলাকায় রেখে সেও পালিয়ে যায়। পরে ওই নারী মাগুরা মোড় হতে তেঁতুলিয়া বাজার পর্যন্ত ঘোরাফেরা করতে থাকলে স্থানীয় লোকজন তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
ঘটনাটি জানার পর পঞ্চগড় পুলিশ সুপার সিরাজুল হুদার নির্দেশক্রমে তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) কনক কুমার দাস, আমিরুল্লাহ (সদর সার্কেল) ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে ভুক্তভোগী নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় পুলিশ ও বিজিবির যৌথ অভিযানে অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে আটক করা হয়। থানায় হেফাজতে আনার পর তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার ধর্ষণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর চাচা নিরঞ্জন চন্দ্র রায় ঘটনার বিস্তারিত শুনে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় মামলা রুজু করে। বিকেলে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এদিকে ভুক্তভোগী নারীকে পরীক্ষা করতে জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
তবে এদিকে আটক হওয়া চারজনের পরিবারের অভিযোগ, তাদেরকে অন্যায়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের নামে গভীর রাতে বাড়িতে তুলে এনে আটক দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেছে। কারণ হিসেবে তারা জানান, যে নারীর কথা বলা হচ্ছে সে একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারী। যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে শুধু আব্দুল্লাহর প্রতি অভিযোগ করেছেন। তাহলে কেন অন্যায়ভাবে আমাদের সন্তানকে গ্রেপ্তার করা হলো। বিষয়টি নিয়ে তারা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তেঁতুলিয়া মডেল থানায় আটক হওয়া সাব্বির হোসেনের চাচা ইসমাইল হোসেন কাফনের কাপড় পড়ে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানান।
এসকে দোয়েল/আরকে