হজরত আবদুল্লাহ বিন সালাম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন (হিজরত করে মক্কা থেকে) মদীনায় এলেন তখন লোকেরা তাঁর কাছে যেতে লাগলো এবং সবাই বলাবলি করতে লাগলো, আল্লাহর রাসূল এসেছেন, আল্লাহর রাসূল এসেছেন, আল্লাহর রাসূল এসেছেন (তিনবার)। আমিও লোকজনের সাথে (তাঁকে) দেখতে গেলাম। আমি তাঁর মুখমন্ডল ভালোভাবে দেখার পর বুঝতে পারলাম, এই চেহারা মিথ্যাবাদীর নয়। সর্বপ্রথম তাঁর মুখে আমার শোনা কথা এই যে, তিনি বললেন—
হজরত আবদুল্লাহ বিন সালাম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন (হিজরত করে মক্কা থেকে) মদীনায় এলেন তখন লোকেরা তাঁর কাছে যেতে লাগলো এবং সবাই বলাবলি করতে লাগলো, আল্লাহর রাসূল এসেছেন, আল্লাহর রাসূল এসেছেন, আল্লাহর রাসূল এসেছেন (তিনবার)। আমিও লোকজনের সাথে (তাঁকে) দেখতে গেলাম। আমি তাঁর মুখমন্ডল ভালোভাবে দেখার পর বুঝতে পারলাম, এই চেহারা মিথ্যাবাদীর নয়। সর্বপ্রথম তাঁর মুখে আমার শোনা কথা এই যে, তিনি বললেন—
হে লোকসকল! তোমরা সালামের ব্যাপক প্রচলন করো, আহার (অভাবিকে খাবার) করাও, আত্নীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখো এবং লোকজন যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন রাতের বেলা নামাজ পড়ো। শান্তিতে জান্নাতে প্রবেশ করো। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪৮৫)
আব্দুল্লাহ ইবনে ইবনে সালাম রা.-এর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ইবনে সালাম রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন একজন ইহুদি পাদরি। তিনি ইহুদি ধর্মের গ্রন্থ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতেন। সেখানে বর্ণিত শেষ নবীর আলামত সম্পর্কে জানতেন। তিনি ছিলেন হজরত ইয়াকুব ইবনে ইউসুফ আ.-এর বংশধর।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করতে এলেন, তখন মদিনার লোকজন দলে দলে রাসূল সা.-কে দেখতে আসছিল। তাদের সঙ্গে আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রা.-ও এলেন। মুহাম্মদ সা.-ই ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত শেষ নবী কি না তা যাচাই করতে তিনি রাসূল সা.-কে কয়েকটি প্রশ্ন করলেন।
তিনি রাসূলুল্লাহ সা.-এর নূরানী চেহারা দেখেই অনুভব করতে পারেন যে, সত্যিই ইনি আল্লাহর প্রেরিত শেষ নবী। রাসূলুল্লাহ সা. তখন উপস্থিত নও-মুসলিমদের মাঝে ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। সেদিন রাসূল সা.-এর কথা শুনে কোনো প্রশ্ন না করেই চলে গেলেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রা.।
দ্বিতীয় দিন রাসূলুল্লাহ সা.-এর কাছে উপস্থিত হয়ে তাঁর সাথে কিছুক্ষণ একান্ত আলোচনাকালে তাঁকে এমন কিছু প্রশ্ন করলেন, যার উত্তর নবী ছাড়া অন্য কারো পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে হজরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা. নবী সা.-এর কাছে এসে বললেন, আমি আপনাকে তিনটি প্রশ্ন করছি। এগুলোর ঠিক উত্তর নবী ছাড়া অন্য কেউ জানে না। প্রশ্নগুলো হলো—
১. কিয়ামতের সর্বপ্রথম আলামত কী?২. জান্নাতবাসীদের সর্বপ্রথম কী খাবার দেওয়া হবে? ৩. কী কারণে সন্তান আকৃতিতে কখনো পিতার মতো, কখনো মায়ের মতো হয়?
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ বিষয়গুলো সম্পর্কে এই মাত্র জিবরাইল আলাইহিস সালাম আমাকে জানিয়ে গেলেন। এর উত্তর হলো—
১. কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার সর্বপ্রথম আলামত লেলিহান অগ্নি যা মানুষকে পূর্বদিক হতে পশ্চিম দিকে ধাবিত করে নিয়ে যাবে এবং সবাইকে একত্র করবে।
২. সর্বপ্রথম খাদ্য যা জান্নাতবাসী খাবে তা হলো মাছের কলিজার বাড়তি অংশ।
৩. যদি নারীর আগে পুরুষের বীর্যপাত ঘটে তবে সন্তান পিতার মতো হয়। আর যদি পুরুষের আগে নারীর বীর্যপাত ঘটে তবে সন্তান মায়ের মতো হয়। আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসুল। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৩৪৮)