ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১৫ দিনের জেল, বাড়ি ফিরে যুবলীগ-কর্মীর আত্মহত্যা

ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১৫ দিনের জেল, বাড়ি ফিরে যুবলীগ-কর্মীর আত্মহত্যা

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ১৫ দিনের সাজাভোগের পর কারাগার থেকে বাড়ি ফিরে যুবলীগের এক কর্মী আত্মহত্যা করেছেন।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ১৫ দিনের সাজাভোগের পর কারাগার থেকে বাড়ি ফিরে যুবলীগের এক কর্মী আত্মহত্যা করেছেন।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।

মারা যাওয়া ওই যুবলীগ কর্মীর নাম আজমল হোসেন ওরফে মদন। তিনি বিষ্ণপুর গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে। আজমল হোসেন মদন বিবাহিত ছিলেন। তার দুই সন্তান আছে। তিনি পেশায় একজন মৎস্য চাষী ছিলেন। আজমল তিলকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিলকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান দিপু।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মাদক সেবন করায় আজমলের বাবাই তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে হাজতে পাঠান। এতে অভিমানে তিনি এমনটি করেছেন বলে জানা গেছে। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে জানাজা শেষে পরিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

গ্রামবাসী ও পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আজমল দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত ছিলেন। পরিবারের লোকজন বারবার চেষ্টা করেও তাকে মাদকাসক্ত থেকে ফেরাতে পারেননি। শেষে পরিবারের লোকজন  তার ওপর অতিষ্ঠ হয়ে তাকে মাদকদ্রব্যে অধিদপ্তরের ধরিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত নেন। গত ২ অক্টোবর বাড়িতে মাদক সেবন করার সময় পরিবারের লোকজন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজদের খবর দিয়ে তাকে ধরিয়ে দেন। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৫ দিনের সাজা দেওয়া হয়।

এরপর গত বুধবার তিনি সাজাভোগ শেষে কারাগার থেকে বাড়ি ফেরেন। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে একটি ঘরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। বিকেলে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে আবারও ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমাতে যান। ওইদিন সন্ধ্যার পর তিনি ঘুম থেকে উঠছিলেন না। তখন পরিবারের লোকজন ঘরের দরজায় গিয়ে অনেক ডাকাডাকি করলেও তিনি দরজা খোলেননি। পরে ঘরের দরজা ভেঙে গলায় ওড়না পেঁচানো তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে রাতেই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ও লাশের অবস্থা দেখে আত্মহত্যা বলে নিশ্চিত হয়েছে।

নিহত আজমলের ভাতিজা নাঈম হোসেন বলেন, আমার চাচা মাদকাসক্ত ছিলেন। পারিবািরক সম্মতিতে নিজ বাড়িতে মাদকসেবন করার সময় তাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজনের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তার ১৫ দিন সাজা হয়েছিল। সাজাভোগ শেষে বুধবার বেলা ১১টায় তিনি বাড়ি আসেন। এরপর সন্ধ্যায় নিজ বাড়ির একটি ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।

তিলকপুর ইউপি সদস্য আতাবুল ইসলাম বলেন, আজমল মাদকাসক্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের জীবন শেষ করলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের ১৫ দিনের সাজাভোগ শেষে বাড়িতে এসেছিলেন। আর ওইদিনই আত্মহত্যা করছেন।

চম্পক কুমার/এফআরএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *