দেশেই হবে স্তন পুনঃস্থাপন, প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন দেড় শতাধিক চিকিৎসক

দেশেই হবে স্তন পুনঃস্থাপন, প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন দেড় শতাধিক চিকিৎসক

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ব্রেস্ট রিকনস্ট্রাকশন (স্তন পুনঃস্থাপন) কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে দেড় শতাধিক দেশি-বিদেশি চিকিৎসককে নিয়ে তিন দিনব্যাপী প্লাস্টিক সার্জারি ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি নাম করা একাধিক প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ।

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ব্রেস্ট রিকনস্ট্রাকশন (স্তন পুনঃস্থাপন) কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে দেড় শতাধিক দেশি-বিদেশি চিকিৎসককে নিয়ে তিন দিনব্যাপী প্লাস্টিক সার্জারি ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি নাম করা একাধিক প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) থেকে সোমবার (২৮ অক্টোবর) পর্যন্ত রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এ ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে সার্বিক সহায়তা করে প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসকদের প্লাটফর্ম প্ল্যানেটারি হেলথ অ্যাকাডেমিয়া।

তিন দিনব্যাপী চলা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের শেষ দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর। এছাড়া বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. রায়হানা আউয়ালসহ দেশের বিশিষ্ট প্লাস্টিক সার্জনরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রশিক্ষণের সমাপনী দিনে বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, প্ল্যানেটারি হেলথ অ্যাকাডেমিয়া বাংলাদেশি প্লাস্টিক সার্জনদের মানোন্নয়নে দারুণ একটি পদক্ষেপ নিয়েছে। এটি আমাদের জন্য একইসঙ্গে গৌরবের ও আনন্দের। দেশের স্বাস্থ্য সেবাকে এগিয়ে নিতে টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। এতে ভুল-ত্রুটি মুক্তভাবে কাজ করা যায়। 

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটাই, আমাদের স্বাস্থ্যখাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেশের অনেক সার্জন বিদেশেও প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাদের মেধা দেশের কাজে আসছে। সবাই মিলে কাজ করলে দেশের স্বাস্থ্যখাত এগিয়ে যাবে। চিকিৎসকদের দায়িত্ব জনগণের চিকিৎসা সেবা দেওয়া। আমাদের দেশে বিভিন্ন রকমের রোগী রয়েছে, অনেকেই সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না।

প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. রায়হানা আউয়াল বলেন, প্লাস্টিক সার্জারিতে ব্রেস্ট রিকনস্ট্রাকশন কীভাবে করা যায়, এটি এখনও বাংলাদেশে শুরু হয়নি। শুরু করার আগে যারা নিয়মিত এ অপারেশন করেন, তাদের কয়েকজন বিদেশ থেকে এসেছেন। তাদের স্কিলটা আমাদের সঙ্গে সেয়ার করেছেন। এতে আমাদেরও দক্ষতা অর্জন হবে। তারা চলে যাওয়ার পর আমরা দেশে এ কাজটা শুরু করব। সেই স্কিলটা ট্রান্সফার হচ্ছে এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, এই আয়োজন করছেন বাংলাদেশে প্রবাসী চিকিৎসকরা। করোনার সময় মিলে প্রবাসী চিকিৎসকরা একটি অ্যাকাডেমিয়া তৈরি করেন, সেখান থেকে সহযোগিতা করছেন। তাঁরা বিভিন্নভাবে দেশের চিকিৎসকদের দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। যাতে আমরা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে কাজ করতে পারি। আমাদের আশা, আমরা ব্রেস্ট ক্যান্সারের রোগীদেরকে ভবিষ্যতে দেশেই যথাযথ চিকিৎসা দিতে পারবো।

অধ্যাপক ডা. রায়হানা আউয়াল বলেন, দেশে প্রতিবছর ১৪-১৫ হাজার ব্রেস্ট ক্যানসার রোগী শনাক্ত হচ্ছে। অনেকেরই দেরিতে রোগ শনাক্ত হয়। আমাদের দেশে চাকরি ক্ষেত্রে বা অন্যান্য জায়গায় নারী-পুরুষ সমান সংখ্যক কাজ করেন। এতে সবার মধ্যে ব্রেস্ট ক্যানসার কমন হয়ে যাচ্ছে। খাবারের সমস্যা, শারীরিক অ্যাক্টিভিটিস কম, স্বাস্থ্য যত্ন ঠিক মতো না নেওয়া। সবমিলিয়ে এ রোগটা বেড়ে যাচ্ছে।

তরুণ চিকিৎসকদের শিখার আগ্রহের কথা জানিয়ে অধ্যাপক ডা. রায়হানা আউয়াল বলেন, এ চিকিৎসা পদ্ধতি শিখতে তরুণ চিকিৎসকদের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে এবং তারা আগ্রহ সহকারে শিখছেনও। ওয়ার্কশপে তরুণ চিকিৎসকরা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন প্রশ্ন করছেন, তাদের জানার পরিধিও বাড়ছে। যেখানে মনে হচ্ছে, এটা কীভাবে হলো, কেন হলো, প্রশ্ন করার মাধ্যমে শিখে নিচ্ছেন তরুণ চিকিৎসকরা।

টিআই/এমএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *