গুলিতে নিহত সাজুর সন্তানের দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা

গুলিতে নিহত সাজুর সন্তানের দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন পঞ্চগড়ের সাজু ইসলাম (২৬)। সরকার পতনের দিন মিছিলে পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাণ হারান ছাত্র আন্দোলনের এই যোদ্ধা। সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের চিলাহাটি ইউনিয়নের টোকরাভাষা মিরপাড়া গ্রামের কবরস্থানে সমাহিত হয়েছেন তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন পঞ্চগড়ের সাজু ইসলাম (২৬)। সরকার পতনের দিন মিছিলে পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাণ হারান ছাত্র আন্দোলনের এই যোদ্ধা। সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের চিলাহাটি ইউনিয়নের টোকরাভাষা মিরপাড়া গ্রামের কবরস্থানে সমাহিত হয়েছেন তিনি।

পরিবার চালাতে জীবিকার তাগিদে ঢাকার গাজীপুরে একটি টেক্সটাইল মিলে চাকরি করতেন সাজু। জড়িত ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের গণঅধিকার পরিষদের অঙ্গসংগঠন শ্রমিক অধিকার পরিষদের সঙ্গে। এ সংগঠনের পঞ্চগড় জেলা কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতেন তিনি। গত ২৪ জুলাই গ্রামের বাড়িতে সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে রেখে ফেরেন গাজীপুরে। তার তিন দিন পড়েই ভূমিষ্ঠ হয় নবজাতক শিশু আবু সাঈদের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে এ যুদ্ধে প্রথম শহীদ আবু সাঈদের নামানুসারেই রেখেছিলেন সন্তানের নাম।

সন্তানের নাম আবু সাঈদের নামানুসারে রাখলেও ছেলের সান্নিধ্য পাওয়ার আগেই ১৬ দিনের মাথায় পরপারে পাড়ি জমালেন সাজু ইসলাম। ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন আন্দোলনের মিছিলে গুলিবিদ্ধ হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সোমবার ভোর রাতে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে সাজু ইসলামের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার বাড়িতে ছুটে যান বিএনপির পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ও পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ। নিহত সাজুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তার নবজাতকের দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির এ নেতা। একই সঙ্গে নগদ ৫০ হাজার টাকাও তুলে দিয়েছেন বাবা আজাহার আলীর হাতে।

নবজাতক সন্তানের দায়িত্ব নেওয়া প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, এই অবুঝ সন্তানকে রেখে তার বাবা শহীদ হয়েছেন। এই অবুঝ বাচ্চাকে আজ আমরা কী জবাব দেব। এই সন্তানদের যদি আমরা পুনর্বাসন করতে পারি, যোগ্যতা ও মর্যাদা দিয়ে সামনে এগিয়ে নিতে পারি তাহলেই এই জাতি আমাদের এই মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণে রাখবে। আমাদের এই অর্জনকে তারা ব্যাহত হতে দেবে না। এখনো এ অর্জনকে ব্যাহত করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। আসুন আমরা সবাই এই সন্তানের দিকে তাকিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমস্ত ষড়যন্ত্র পদদলিত করি। এই সন্তানের পিতার আত্মত্যাগকে মহিমান করি।

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউপির অন্তর্গত টোকরাভাষা মিরপাড়া গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে সাজু ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় সাজু।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের দিন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে গাজীপুরের মাওনা হতে একটি মিছিল বের হয়। সাজু সেই মিছিলে যোগ দিয়ে যাচ্ছিলেন গণভবনের দিকে। ওই সময়ে ময়মনসিংহ থেকে সাতটি পিকআপে করে বিজিবি ও পুলিশ এসে গুলি করতে থাকে।  পুলিশের গুলি দুই দফা সাজুর পিঠে লেগে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে  উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে প্রথমবার অপারেশন করা হয়। কিন্তু সফল না হওয়ায় দ্বিতীয়বার অপারেশনে গুলি বের করা হয়। ৫ আগস্ট থেকে সাজু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার ভোর রাতে সে মারা যায়। পরে তার বাবা মরদেহ নিয়ে বাড়িতে ফিরলে বিকেলে তার জানাজা শেষে সমাহিত করা হয়।

এসকে দোয়েল/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *