নোবিপ্রবির সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী হেন্তার অভিযোগ 

নোবিপ্রবির সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী হেন্তার অভিযোগ 

শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিতে মন্তব্য করায় চার বছর পড়াশোনা করতে না দেওয়া নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সেই শিক্ষেকর বিরুদ্ধে পর্দা নিয়ে হেনস্তার অভিযোগে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।

শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিতে মন্তব্য করায় চার বছর পড়াশোনা করতে না দেওয়া নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সেই শিক্ষেকর বিরুদ্ধে পর্দা নিয়ে হেনস্তার অভিযোগে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তারা এ মানববন্ধন করেন। অভিযুক্ত অধ্যাপক বাদশা মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান।

মানববন্ধনে আইন বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী নিপা আক্তার পর্দা করায় নিজের সঙ্গে ঘটা হেনস্তার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, বাদশা স্যার আমাকে আমার পর্দা নিয়ে অনেক হ্যারাস করছে। শুরুতে বলে রাখি, ভার্সিটির প্রথমদিকে আমি শুধু হিজাব পরতাম। পরে আল্লাহ হেদায়েত দেন। আমি নিকাব পড়া শুরু করি। একদিন আমি তার কাছে গিয়েছিলাম আমার হলের সিটের ব্যাপারে কথা বলতে। কিন্তু তিনি আমাকে আমার পর্দা নিয়ে অনেক কথা শোনায়। আমার এই অবস্থা কেন? আমার কী বিয়ে হয়েছে? আমাকে কিন্তু এইভাবে কোর্টে এলাউ করবে না। এভাবে বিভিন্ন ধরনের কথা শোনান। 

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমি হলে যখন এক্সাম দিচ্ছিলাম তখন তিনি আমাকে অনেক অপমান করেন। তোমার প্রবেশপত্রে যে ছবি দেখা যাচ্ছে এখন লজ্জা করে না? মুখ খুলতে কীসের লজ্জা। আরও অনেক কথা বলে আমাকে অপমান করেন এবং তিনি আমার খাতায় সাইনও করতে চাননি। 

এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী নোবিপ্রবি বিএমএস বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ বিন খলিল বলেন, পরীক্ষার হলে আইন বিভাগের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া একটি মেয়েকে পর্দা করায় নাম জিজ্ঞেস করে বলে, এভাবে আমি সাইন দেব না। তুমি নেকাব না খুললে আমি কিভাবে বুঝব তুমি আমার বিভাগের মেয়ে। পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করলে তিনি আমাকে কল দিয়ে পোস্ট ডিলিট করতে বাধ্য করে। 

মানববন্ধনে ভুক্তভোগী ছাত্রীর সহপাঠী এবং বান্ধবী অর্পিতা দাস বলেন, নিপার সঙ্গে ২য় বর্ষ থেকেই বাদশা স্যার অস্বাভাবিক আচরণ করতো। এর কারণ হচ্ছে সে মুসলিম ধর্ম অনুযায়ী পর্দা করতে শুরু করে। পরীক্ষার হলে এবং ভাইবা বোর্ডেও সে পর্দা করতো। কিন্তু বাদশা স্যার তাকে মানসিক যন্ত্রণা দিতো শুধু পর্দা করার কারণে। 

২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী নৌরিই ত্বহা বলেন, পর্দা করা মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার। সেখানে হস্তক্ষেপ করা বা তা নিয়ে হেনস্তা করার অধিকার কারো নেই। আজকে আমরা আমাদের সিনিয়র আপুর পক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছি। 

এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে বাদশা মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরীক্ষার হলে নেকাব পরায় তাকে চিনতে পারছিলাম না তাই তাকে শুধুমাত্র নাম জিজ্ঞেস করেছিলাম। নাম জিজ্ঞেস করা তো অপরাধের কিছু না। 

প্রসঙ্গত, বাদশা মিয়ার বিরুদ্ধে এর আগে নোবিপ্রবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ফয়েজ বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননার অভিযোগ তুলে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনের ৪ বছর ধ্বংস করে দেওয়া এবং মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানোর অভিযোগ ওঠে। ওই শিক্ষার্থী প্রতিকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইলের নিকট অভিযোগ পত্র জমা দেন। এ সময় পাশে তার থাকার আশ্বাস দেন উপাচার্য।

হাসিব আল আমিন/আরকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *