৭০ ইসরায়েলি সেনাকে হত্যার দাবি হিজবুল্লাহর

৭০ ইসরায়েলি সেনাকে হত্যার দাবি হিজবুল্লাহর

লেবাননে অভিযানরত ইসরায়েলি বাহিনীর ৭০ জন সেনাকে হত্যার দাবি করেছে সশস্ত্র ইসলামি রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। বুধবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে গোষ্ঠীটি।

লেবাননে অভিযানরত ইসরায়েলি বাহিনীর ৭০ জন সেনাকে হত্যার দাবি করেছে সশস্ত্র ইসলামি রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। বুধবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে গোষ্ঠীটি।

ঠিক কত দিনে এই সেনারা নিহত হয়েছেন, তা অবশ্য এই বিবৃতিতে উল্লেখ করেনি গোষ্ঠীটি। তবে গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে ৫৫ জন ইসরায়েলি সেনা নিহতের দাবি করা হয়েছিল। ফলে এই মুহূর্তে এটি স্পষ্ট নয় যে গত কয়েক দিনে গোষ্ঠীটি ৭০ জন ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করেছে না কি ১৫ জনকে হত্যা করেছে। ৫৫’র সঙ্গে ১৫ যোগ করলে যোগফল ৭০ হয়।

এদিকে পৃথক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, লেবাননে অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫০ জন ইসরায়েলি সেনা। এদের মধ্যে ২০ জন নিহত হয়েছেন লেবাননে সামরিক অভিযান চালানোর সময়, বাকি ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তর ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হিজবুল্লাহ বাহিনীর ছোড়া রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েল এবং লেবানন প্রতিবেশী দেশ। ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তের অপর পাশেই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল। হিজবুল্লাহর প্রধান ঘাঁটি এবং সামরিক স্থাপনাগুলোর অবস্থানও ইসরায়েলের সীমান্তঘেঁষা দক্ষিন লেবাননের গ্রামগুলোতে।

ইরানের প্রত্যক্ষ মদত ও সমর্থনপুষ্ট হিজবুল্লাহ সামরিক স্থাপনা, যোদ্ধার সংখ্যা এবং মজুতকৃত অস্ত্রের পরিমাণের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম সশস্ত্র ইসলামি রাজনৈতিক গোষ্ঠী। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ গোষ্ঠীটি শুরু থেকেই ইসরায়েলকে ধ্বংসের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

লেবাননের সরকার কিংবা সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে হিজবুল্লাহর সরাসরি কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, তবে আড়ালে থেকে দেশটির ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে গোষ্ঠীটি।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে উত্তর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ, তবে সেই হামলার মাত্রা ব্যাপকভাবে গোষ্ঠীটি বাড়িয়েছে ২০২৩ সালে গাজায় হামাস এবং ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে।

গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে হিজবুল্লাহ। পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করে ইসরায়েলও। গত এক বছরে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে লেবাননে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৫ শতাধিক। তবে আইডিএফের দাবি, এই নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯৪০ জন হিজবুল্লাহ কমান্ডার ও যোদ্ধা রয়েছে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। প্রায় ১০ দিনের সেই অভিযানে নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা ও সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহসহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ কমান্ডার। এতে গোষ্ঠীটির চেইন অব কমান্ডের সর্বোচ্চ স্তর প্রায় ভেঙে পড়েছে।

বিমান অভিযান পর্বের পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণ লেবাননে অভিযান শুরু করেছে আইডিএফের স্থল বাহিনী। এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে আইডিএফ বলেছিল, ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ লেবাননের গ্রামগুলোতে সীমিত ও স্থানীয় পর্যায়ে অভিযান চালানো হবে। তবে কতদিন এ অভিযান চলবে, সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য বা ইঙ্গিত এখনও দেয়নি আইডিএফ।

ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে ইতোমধ্যে লেবাননে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

শনিবারের বিবৃতিতে আইডিএফ জানিয়েছিল, দক্ষিণ লেবাননে গত প্রায় এক মাসের অভিযানে হিজবুল্লাহর ১২০টিরও বেশি সামরিক স্থাপনা, বেশ কিছু সুড়ঙ্গ এবং ২০টি অস্ত্রাগার ধ্বংস করেছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *