কন্ডিশনার এবং মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক তেলের ভূমিকা
হেয়ার কন্ডিশনার চুল স্বাস্থ্যকর এবং চকচকে বজায় রাখার জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান। এটি ব্যবহারের ধরন আপনার চুল এবং মাথার ত্বকের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বড় পার্থক্য আনতে পারে। অনেকে মনে করেন এটি আগা-গোড়া লাগালে বেশি উপকার পাওয়া যাবে। তবে বিশেষজ্ঞরা সরাসরি মাথার ত্বকে কন্ডিশনার প্রয়োগের বিরুদ্ধে পরামর্শ দেন।
কন্ডিশনার এবং মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক তেলের ভূমিকা
কন্ডিশনার প্রাথমিকভাবে আর্দ্রতা যোগ করার জন্য এবং চুল মসৃণ করার জন্য কাজ করে। আমাদের চুল তাপ, স্টাইলিং এবং পরিবেশগত কারণে শুষ্ক এবং ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। চুলের আগা এর গোড়ার তুলনায় বেশি ছিদ্রযুক্ত এবং অতিরিক্ত হাইড্রেশনের প্রয়োজন হয়। কন্ডিশনার মূলত চুলের জন্য তৈরি করা হয়, মাথার ত্বকের জন্য নয়। মাথার ত্বক স্বাভাবিকভাবেই সিবাম তৈরি করে। সিবাম হলো একটি তেল যা চুলের গোড়ার কাছাকাছি ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে। মাথার ত্বকে সরাসরি কন্ডিশনার প্রয়োগ করলে তা এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াটকে ব্যাহত করতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক মাথার ত্বকে কন্ডিশনার ব্যবহার করলে আরও কী সমস্যা হতে পারে-
তেলের ভারসাম্যহীনতা
মাথার ত্বক চুলের গোড়াকে স্বাভাবিকভাবে কন্ডিশন করার জন্য সিবাম তৈরি করে। আমরা যখন মাথার ত্বকে কন্ডিশনার প্রয়োগ করি, তখন এটি তেলের অতিরিক্ত উৎপাদনের কারণ হতে পারে। ফলে চুল আরও বেশি তেল চিটচিটে দেখাতে পারে এবং মাথার ত্বকে সমস্যা হতে পারে।
বিল্ড-আপ
কন্ডিশনার ঘন এবং মাথার ত্বক থেকে সম্পূর্ণরূপে ধুয়ে ফেলা কঠিন এমন ময়লা আটকে দিতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই বিল্ড আপ চুলের ফলিকলগুলোকে আটকে দিতে পারে। যার ফলে খুশকি, চুলকানি এবং এমনকী চুল পড়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
রুগ্ন চুল
মাথার ত্বকে অবশিষ্ট কন্ডিশনার আপনার চুলকে রুগ্ন করে দিতে পারে। ফলে চুল প্রাণহীন দেখায়। বিশেষ করে যাদের চুলের ঘনত্ব কম তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
জার্নাল অফ কসমেটিক ডার্মাটোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, চুলের কন্ডিশনারের অনুপযুক্ত প্রয়োগ, বিশেষ করে মাথার ত্বকে এটি ব্যবহার করলে তা সেবোরিক ডার্মাটাইটিস এবং মাথার ত্বকের ব্রণের মতো সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এর ফলে অবরুদ্ধ ফলিকল এবং সিবামের অত্যধিক উৎপাদন দেখা দিতে পারে।
হেয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করার সঠিক উপায়
গোড়ার চুলের তুলনায় আগার চুল পুরানো, বেশি ক্ষতিগ্রস্থ এবং কম ময়েশ্চারাইজড। সেজন্য আপনার চুলের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে চুলের শেষ পর্যন্ত কন্ডিশনার লাগান, যেখানে এটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এই পদ্ধতিতে ব্যবহার করলে মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক ভারসাম্যকে প্রভাবিত না করে চুল হাইড্রেটেড এবং মসৃণ হবে।
কন্ডিশনার লাগানোর পরে, চুলে আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন। এটি কন্ডিশনারকে চুলের শ্যাফটে প্রবেশ করতে সাহায্য করে এবং আরও ভালো ফল দেয়। কন্ডিশনারের যাদু কাজ করার জন্য সময় প্রয়োজন। সেজন্য এটি ব্যবহারের পর কয়েক মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর পুরোপুরি ধুয়ে ফেলতে ভুলবেন না।
এইচএন