হাসিনার পতন যেভাবে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে প্রভাব ফেলল

হাসিনার পতন যেভাবে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে প্রভাব ফেলল

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর ঢাকার রাজপথে আনন্দ-উল্লাস শুরু হয়। তবে এটি ভারতে তৈরি করে সতর্কতা। কারণ ইসলামপন্থি এবং চীনকে ঠেকাতে হাসিনা সরকারকে শুরু থেকে সমর্থন দিয়ে এসেছে ভারত।

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর ঢাকার রাজপথে আনন্দ-উল্লাস শুরু হয়। তবে এটি ভারতে তৈরি করে সতর্কতা। কারণ ইসলামপন্থি এবং চীনকে ঠেকাতে হাসিনা সরকারকে শুরু থেকে সমর্থন দিয়ে এসেছে ভারত।

হাসিনার পতন ভারতকে ফেলেছে একটি কূটনৈতিক উভয়দ্বন্দ্বে। ছাত্র ও জনতার তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা।

এরপর প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বে যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়; তখন সবার আগে তাকে শুভেচ্ছা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে নয়াদিল্লি বদ্ধপরিকর।

ভারতের পাশাপাশি তাৎক্ষনিকভাবে চীনও নতুন সরকারকে শুভেচ্ছা জানায়। তারা বলে, সম্পর্ক উন্নয়নে যে অঙ্গীকার তাদের ছিল সেটি এখনো অক্ষুন্ন রয়েছে।

শেখ হাসিনার বিরোধীরা যেহেতু এখন বাংলাদেশের সরকারে রয়েছে। ফলে পূর্বে ভারত হাসিনাকে যে সমর্থন দিয়েছিল সেটি এখন তাদের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক থমাস কিন বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, “বাংলাদেশের মানুষের দৃষ্টিতে— ভারত গত কয়েক বছর ধরে ভুল পক্ষে ছিল। ভারতীয় সরকার বাংলাদেশে কোনো ধরনের পরিবর্তন দেখতে চায়নি এবং গত কয়েক বছরে তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছে হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের কোনো বিকল্প তারা দেখছে না।”

অন্যদের ক্ষতিকর মনে করে ভারত

বাংলাদেশের তিনদিকেই রয়েছে ভারতের সীমান্ত। ফলে এখানে ভারতের প্রভাব বেশি।

বড় দেশ হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপেও নিজেদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়েছে ভারত ও চীন।

তা সত্ত্বেও হাসিনা ভারতের পাশাপাশি চীনের সঙ্গে একটি ভারসাম্যমূলক সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে পেরেছিলেন।

তবে হাসিনা রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ অন্য যাদের হুমকি হিসেবে মনে করতেন; ভারতও তাদের হুমকি মনে করত।

সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান এএফপিকে বলেছেন, “ভারত শঙ্কিত এই ভেবে যে… হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের বিকল্প তাদের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। নয়াদিল্লির দৃষ্টিতে বিএনপি এবং তাদের মিত্ররা ভয়ঙ্কর ইসলামপন্থি দল। এসব দল ভারতের স্বার্থকে বিপদে ফেলতে পারে।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনূস জানিয়েছেন তিনি কয়েক মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন দেবেন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপির ক্ষমতায় আসার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

সম্পর্কে ক্ষয়ক্ষতি যা হয়েছে তা এখনই থামানোর আহ্বান ভারতের মিডিয়ার

ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে তাদের দেশ “এখন ভয়ঙ্কর কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের” মুখে পড়েছে।

প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, “ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এখন নয়াদিল্লিকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে এবং বিদ্যমান ভালো সম্পর্ক সুরক্ষিত রাখতে হবে। এরমধ্যে থাকবে সাম্প্রতিক ধাক্কাগুলো।”

তবে নতুন উপদেষ্টা ডক্টর ইউনূস ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হতে পারে উল্লেখ করেছেন। সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করতে বাংলাদেশে আসার আগে দ্য ইকোনোমিস্টে একটি কলাম লিখেন ইউনূস। এতে তিনি লিখেছেন, “যদিও ভারতসহ কিছু দেশ হাসিনাকে সমর্থন জানিয়েছে। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তারা শত্রুতা অর্জন করেছে। কিন্তু এসব দ্বন্দ্ব নিরসনে সামনে অনেক সুযোগ আসবে।”

সূত্র: এএফপি

এমটিআই

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *