চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডেলিভারির পর অক্সিজেনের অভাবে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডেলিভারির পর অক্সিজেনের অভাবে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
এরপরই পুরো হাসপাতালজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল সদর হাসপাতালে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাতিভাঙ্গা গ্রামের মুকুল হোসেনের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রিয়া খাতুনকে গত শুক্রবার রাতে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। ওই ওয়ার্ডের কর্তব্যরত নার্সরা জানান, রিয়া খাতুনের নরমাল ডেলিভারিতে কোনও সমস্যা নেই। তবে পরিবারের সদস্যরা সিজারিয়ান অপারেশন করতে বারবার বললেও চিকিৎসক সাড়া দেননি।
শনিবার বেলা ১২টার দিকে গাইনি ওয়ার্ডের ডেলিভারি রুমে নেওয়া হয় রিয়া খাতুনকে। সিনিয়র স্টাফ নার্স ও একজন আয়া মর্জিনাকে নিয়ে ডেলিভারি সম্পন্ন করেন। এসময় এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন রিয়া খাতুন।
সিনিয়র স্টাফ নার্স মমতাজ খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সুন্দরভাবে ডেলিভারি সম্পন্ন হয়। কিন্তু নবজাতক কান্না করেনি। ডেলিভারির পর নবজাতকটি শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। এসময় ওয়ার্ডে থাকা অক্সিজেন সিলিন্ডারটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে অন্য ওয়ার্ড থেকে সিলিন্ডার নিয়ে আসার জন্য বলা হয়। এর মধ্যেই নবজাতকের মৃত্যু হয়। এখানে আমাদের কোনও অবহেলা নেই।
এদিকে, ঘটনার আগে হাসপাতাল পরিদর্শনে আসা একদল শিক্ষার্থী গাইনি ওয়ার্ডে উপস্থিত হন। এরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে আসেন এবং চিকিৎসক, নার্স ও নবজাতকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। এরপরই পরিস্থিতি শান্ত হয়।
প্রসূতি রিয়া খাতুনের স্বামী মুকুল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনিবার সকালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নার্সরা জানান, নরমাল ডেলিভারি করা হবে। কোনও সমস্যা হবে না। আমরা তাদেরকে বারবার বলি আমাদেরকে ছাড়পত্র দিয়ে দেন, আমরা সিজারিয়ান অপারেশন করবো। তবুও তারা আমাদের কোনও কথা কর্ণপাত করেননি। অবহেলায় আমার নবাগত কন্যাসন্তানটির মৃত্যু হলো।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. শাপলা খাতুন বলেন, এখানে অবহেলার কোনও ঘটনা ঘটেনি। অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের একটি লিখিত আকারে জানাতে বলা হয়েছে। এরপরই তদন্ত সাপেক্ষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ বিষয়ে জানতে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তাকে (আরএমও) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিনকে কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।
আফজালুল হক/এমএসএ