হাঁস পালনে সফল ইসলাম আলী

হাঁস পালনে সফল ইসলাম আলী

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাসেমপুর গ্রামের বাসিন্দা ইসলাম আলী। এলাকার সবাই তাকে ‘হাঁস ইসলাম’ বলে চেনেন। তিন লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ৩০০টি হাঁস পালন শুরু করেন। চার বছরের ব্যবধানে তার এখন মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। বাড়িয়েছেন খামারের পরিধিও। এখন দেড় হাজার বেলজিয়াম হাঁস রয়েছে তার খামারে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাসেমপুর গ্রামের বাসিন্দা ইসলাম আলী। এলাকার সবাই তাকে ‘হাঁস ইসলাম’ বলে চেনেন। তিন লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ৩০০টি হাঁস পালন শুরু করেন। চার বছরের ব্যবধানে তার এখন মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। বাড়িয়েছেন খামারের পরিধিও। এখন দেড় হাজার বেলজিয়াম হাঁস রয়েছে তার খামারে।

ইসলাম আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০০০ সালে কিশোরগঞ্জ থেকে ৩০০টি ‘ক্যাম্পবেল’ জাতের হাঁসের বাচ্চা এনে খামার শুরু করি। ২০১৯ সালে নতুন জাতের বেলজিয়াম হাঁস নিয়ে আসি। বর্তমানে ১২০০টি বাচ্চা হাঁস রয়েছে। ৩০০টি বড় হাঁস প্রতিদিন গড়ে ২৯৬টি করে ডিম দিচ্ছে। ডিমের দাম ২০ টাকা পিস। প্রতিদিন ডিম বিক্রি করেই পাঁচ হাজার ৯২০ টাকা আয় হয়। এর মধ্যে খরচ রয়েছে দুই হাজার টাকা। এটি ওষুধের পেছনে ব্যয় হয়। প্রতি চালানে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা লাভ হয়। লাভের টাকা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি প্রতি বছর হাঁসের সংখ্যা বাড়াতে থাকি।

‘বর্তমানে হাঁসগুলো ডিম দিচ্ছে। ডিম ফুটিয়ে বাচ্চাও বিক্রি করছি। পাশাপাশি হাঁসগুলোর মাংস বেশ সুস্বাদু। বছরে নয় থেকে ১০ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। গত মে মাস থেকে মাংসের পাশাপাশি বাচ্চাও উৎপাদন হচ্ছে। প্রায় ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি। প্রতি সপ্তাহে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার বাচ্চা উৎপাদন হচ্ছে।’

‘বাচ্চা উৎপাদনে বছরে ৪০ লাখ টাকা খরচ হলেও বিক্রি হবে কমপক্ষে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ টাকা। খামারে তেমন কোনো বিপর্যয় দেখা না দিলে বছরে ৪০ থেকে ৪৫ লাখ টাকা লাভ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ২৪ বছর ধরে শ্রম আর ধৈর্যের সঙ্গে হাঁসের খামার করছি। ব্যয় বাদ দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে সংসার চলছে। হাঁস পালন করে এখন আমি সফল ও স্বাবলম্বী।

খামারে হাঁসগুলোর পরিচর্যা করছিলেন রহিমা খাতুন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাঁসগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয়। খাওয়াতে হয় ফিড ও পানি। সকাল ৭টার দিকে হাঁসগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়। পাশে পুকুর রয়েছে। সেখানেই সারাদিন কাটায় তারা।

কাসেমপুর গ্রামের বাসিন্দা রহিমা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাঁসগুলো খুব সুন্দর দেখতে। আমাদের বাড়ির পাশেই খামারটি। অনেকে এখান থেকে হাঁস কিনে নিয়ে যান। অনেকে আসেন দেখার জন্য। বেশ ভালো ব্যবসা করছেন ইসলাম আলী।

তালতলা গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, হাঁসগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। চার মাসের মধ্যে বাচ্চা দেয়। অনেকেই দূরদূরান্ত থেকে এখানে হাঁস কিনতে আসেন।

সাতক্ষীরা জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম মাহবুবুর রহমান বলেন, বেলজিয়াম হাঁস মাংস উৎপাদনের জন্য উপযোগী। এখানকার খামারিরা মাংস ও ডিম উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন। এ জাতের হাঁস দ্রুত বর্ধনশীল। একেকটির ওজন হয় চার থেকে পাঁচ কেজি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ হাঁসের চাহিদাও রয়েছে বেশ।

‘এ অঞ্চলে ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক হাঁসের খামার রয়েছে। এর মধ্যে বেলজিয়াম হাঁসের খামার রয়েছে ৩০-৩৫টি। স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে যে কেউ এ ধরনের খামার গড়ে তুলে সচ্ছল হতে পারেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে খামারিদের ডাক প্লেগ ভ্যাকসিনসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’  ইব্রাহিম খলিল/

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *