সাকিবের কাছে এখনো কোটি টাকা পান কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা

সাকিবের কাছে এখনো কোটি টাকা পান কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা

২০১৬ সালে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালীতে স্থানীয় ১০-১২ জন জমির মালিকের কাছ থেকে লিজ নিয়ে ৪৮ বিঘা জমির ওপর কাঁকড়া ও কুঁচের খামার গড়ে তুলেছিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। নাম দেন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম।

২০১৬ সালে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালীতে স্থানীয় ১০-১২ জন জমির মালিকের কাছ থেকে লিজ নিয়ে ৪৮ বিঘা জমির ওপর কাঁকড়া ও কুঁচের খামার গড়ে তুলেছিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। নাম দেন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম।

অভিযোগ রয়েছে, কাঁকড়া হ্যাচারির জন্য সফট সেল কাঁকড়া কিনলেও আজও সেই টাকা পরিশোধ করেননি সদ্য বিলুপ্ত সংসদের সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান। তার কাছে সবমিলিয়ে এক কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ী ও জমির মালিকরা।

তাদের দাবি, টাকা চাইতে সাকিব আল হাসানের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করলে দুর্ব্যবহার করেন তিনি। সব তথ্য-প্রমাণ থাকলেও তারা বকেয়া টাকা পাননি। 

সাকিবের হ্যাচারিতে সফট সেল কাঁকড়া সরবরাহ করা মুন্সিগঞ্জ এলাকাকার বাসিন্দা জুলফিকার আলী বলেন, ২০২১ সালে খামারটি বন্ধ হওয়ার পরে নানাভাবে আমরা চেষ্টা করেছি টাকা আদায় করতে। তবে, কোনোভাবেই আদায় করতে পারিনি। বছরখানেক আগে মাগুরায় সাকিব আল হাসানের বাড়িতে গিয়েছিলাম তার বাবার কাছে। আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। তারপর থেকে বিষয়টি সেভাবেই রয়েছে। টাকা পাব, এর মেমো বা প্রমাণপত্র এখনো রয়েছে।

জুলফিকার আলী বলেন, আমি এখনো ৫-৬ লাখ টাকা পাব। আমরা কাঁকড়া দিয়ে মাস শেষে টাকা নিতাম। হিসাব রাখতেন সাকিবের খামারের দায়িত্বরত ম্যানেজার। এভাবে চলতে চলতে আমার প্রায় তিন মাসের টাকা দেয়নি। সব তথ্য-প্রমাণ থাকলেও আমি টাকা পাইনি। 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এমনকি সাকিব আল হাসানের কাছে পাওনা ৩০ লাখ টাকার শোকে মারা গেছেন বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের ভামিয়া গ্রামের গুরুদাস। তারা (সাকিব) বড় পর্যায়ের মানুষ, এখানে আসতেন না। গুরু দাস হার্ড কাঁকড়া দিতেন সাকিবের খামারে। ৩০ লাখ টাকা বাকি পড়ে আছে তার। গুরুদাস ও আমিসহ ৪-৫ জন সাকিবের বাড়িতে গিয়েছিলাম। বাড়ি থেকে সাকিবের বাবা খারাপ ব্যবহার করে বের করে দেওয়ার পর মন খারাপ করে আমরা ফিরি।

তিনি আরও বলেন, গুরুদাসের ব্যবসা ভালো যাচ্ছিল না। অন্যরা তার কাছে টাকা পাবে। এদিকে সাকিবের কাছে পাওনা টাকাও পাচ্ছিলেন না। এসব নিয়ে চিন্তায় স্ট্রোক করে মারা যান গুরুদাস। আমরা ১৩-১৪ জন এখনো সবমিলিয়ে কোটি টাকারও বেশী পাব সাকিব আল হাসানের কাছে। আমরা আমাদের পাওনা টাকা ফেরত চাই।

একই ধরনের দাবি তুলে বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য হায়দার আলী বলেন, আমি সাকিব আল হাসানের কাছ থেকে সফট সেল কাঁকড়ার ৫০ হাজার টাকা আজও পাব। আমার টাকা একটু কম হলেও অন্য পাওনাদাররা মোটা অঙ্কের টাকা পাবেন।

করোনা মহামারির সময়ে সাকিব আল হাসানের কাঁকড়া হ্যাচারি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর জমির মালিকদের বছরে চুক্তির টাকা দিতেও গড়িমসি করা হয়। তখন মানববন্ধনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন তারা। এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর জমির মালিকরা টাকা পান।

জমির মালিকদের একজন দাতিনাখালি গ্রামের মোরালী কয়াল। তিনি বলেন, টাকা পেতে অনেক ঝামেলা হয়। আগে টাকা নিতে গিয়ে আন্দোলন করতে হয়েছে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত চুক্তিপত্রের মেয়াদ রয়েছে। এরপর আমরা আর কেউ জমি লিজ দেব না। আমরা জমির মালিক রয়েছি ১০-১২ জন।

তিনি আরও বলেন, সাকিব আল হাসান অবৈধভাবে আমাদের জমির ওপর বিল্ডিং নির্মাণ করেছে। চুক্তিপত্রে সেটি উল্লেখ ছিল না। এখন সেখানে কেউ থাকে না। খামার বন্ধ হওয়ার পর থেকে তাদের এখানে দেখাও যায় না। সেভাবেই পড়ে রয়েছে।

ইব্রাহিম খলিল/কেএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *