সড়ক দুর্ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মনির হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে কুষ্টিয়া-ঝিনাদহের উভয় দিকে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় ট্রাফিক আইন বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
সড়ক দুর্ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মনির হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে কুষ্টিয়া-ঝিনাদহের উভয় দিকে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় ট্রাফিক আইন বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এতে নিহতের সহপাঠীসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এরপর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পাঁচ দফা দাবি দিয়ে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো- সড়ক দুর্ঘটনায় ড্রাইভারসহ দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মনির হোসেনের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন এবং কুষ্টিয়া থেকে ঝিনাইদহ পর্যন্ত মহাসড়ক সংস্কার করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস শিডিউলে কুমারখালী পর্যন্ত বাস দেওয়ার দাবি জানাই। সেই সঙ্গে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানাই। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর প্রাণ এভাবে ঝরে যাবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ক্ষতিপূরণসহ পাঁচ দফা দাবির বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান বলেন, দিনমজুর বাবার আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন, অসুস্থ মায়ের বেঁচে থাকার অবলম্বন। সেই স্বপ্ন আজকে ট্রাকচাপায় দুমড়েমুচড়ে গেছে, বেঁচে থাকার অবলম্বন এখন একটি নিথর দেহ। কিন্তু গল্পটা ভিন্নরকম হতে পারতো। যদি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিগত ৩০ বছর ধরে কুমারখালী-খোকসা অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের একটি যৌক্তিক দাবিকে উপেক্ষা, অবজ্ঞা এবং অবহেলা না করতো সেটি হলো ক্যাম্পাস-পান্টি-কুমারখালী রুটে বাস চালুর দাবি। এটি চালু হলে হয়ত ঠুনকোভাবে কোনো শিক্ষার্থীর প্রাণ ঝরতো না।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া হাইওয়ের ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, পাঁচ দফা দাবির মধ্যে তিনটি দাবি আমরা পূরণের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করব। সেগুলো হলো- দোষীদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা, নিরাপদ সড়ক এবং ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন। এ ছাড়া বাকি দুইটি দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পূরণ করতে পারবে। এ ছাড়া এ ঘটনায় ট্রাক এবং সিএনজি চালকের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কুমারখালি থানায় মামলা নং ১৯,সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮. ধারা ৯৮/১০৫।
ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে এখনো কোনো আবেদন আসেনি। সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে যদি কেউ ক্ষতিপূরণের বিষয়ে নিয়ম অনুযায়ী আমাদের কাছে আবেদন জানায় তাহলে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেব।
প্রসঙ্গত, বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সড়ক দুর্ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মনির হোসেন মারা যান। মনির কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার বেল্লাল হোসেনের ছেলে। তিনি বুধবার দুপুর ২টার পর ক্লাস শেষে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পরে বিকেল পৌনে ৩টার দিকে কুষ্টিয়ার চৌড়হাস এলাকায় সিএনজি ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে হয়। এতে তিনি মাথায় মারাত্মকভাবে জখম হন। সেখানকার উপস্থিত লোকজন তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে মনির হোসেন মৃত্যুবরণ করেন।
রাকিব হোসেন/এমেজেইউ