যুদ্ধবিরতি চুক্তির দাবিতে ইসরায়েলে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ

যুদ্ধবিরতি চুক্তির দাবিতে ইসরায়েলে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে যুদ্ধবিরতি চুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার ইসরায়েলি। গাজায় আরও ৬ বন্দির নিহত হওয়ার ঘটনায় তারা রাস্তায় নেমে আসেন এবং বিক্ষোভে অংশ নেন।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে যুদ্ধবিরতি চুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার ইসরায়েলি। গাজায় আরও ৬ বন্দির নিহত হওয়ার ঘটনায় তারা রাস্তায় নেমে আসেন এবং বিক্ষোভে অংশ নেন।

এছাড়া ইসরায়েলের প্রধান শ্রমিক ইউনিয়নও গাজায় বন্দি মৃত্যুর ঘটনায় ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির দাবিতে হাজার হাজার ইসরায়েলি রাস্তায় নেমে এসেছেন এবং গাজায় আরও ছয় বন্দিকে মৃত অবস্থায় পাওয়ার পর ইসরায়েলের প্রধান শ্রমিক ইউনিয়নও ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।

প্রায় ১১ মাস আগে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের শুরু হওয়া সবচেয়ে বড় সরকার বিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে রোববার রাতে বিক্ষোভকারী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের খবরও পাওয়া গেছে।

বিক্ষোভকারীরা “এখন! এখন!” স্লোগান দেন এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি করে বাকী বন্দিদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।

অনেক ইসরায়েলি তেল আবিবে রাস্তা অবরোধ করেন এবং পশ্চিম জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের বাইরেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

আল জাজিরা বলছে, গাজায় বন্দিদের পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করে ‘জিম্মি এবং নিখোঁজ পরিবার ফোরাম’। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, গাজায় আরও ৬ বন্দির এই মৃত্যু নেতানিয়াহুর লড়াই থামাতে এবং তাদের প্রিয়জনকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার চুক্তি নিশ্চিত করতে ব্যর্থতার সরাসরি ফলাফল হিসেবেই সামনে এসেছে।

ফোরামটি বলেছে, ‘হামাসের বন্দিদশায় প্রায় ১১ মাস অত্যাচার, নির্যাতন এবং অনাহারে বেঁচে থাকার পরও গত কয়েক দিনে তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে।’

এদিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য সরকারকে চাপ দিতে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ইসরায়েলের বৃহত্তম ট্রেডস ইউনিয়ন ফেডারেশন হিস্টাড্রুট। গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর প্রথমবারের মতো এই পদক্ষেপ নিলো তারা।

ইউনিয়ন বলেছে, ইসরায়েলের প্রধান বিমান পরিবহন কেন্দ্র বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর সোমবার সকাল ৮ টা থেকে বন্ধ থাকবে। এছাড়া ধর্মঘটের সময় ব্যাংকিং এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ ইসরায়েলের অর্থনীতির প্রধান খাতগুলোকে বন্ধ বা কার্যক্রম ব্যাহত করার লক্ষ্যও নিয়েছে এই ইউনিয়ন।

হিস্টাড্রুট প্রধান আর্নন বার-ডেভিড বলেছেন, ‘একটি চুক্তি অন্য যেকোনও কিছুর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা চুক্তির পরিবর্তে বডি ব্যাগ (মরদেহের ব্যাগ) পাচ্ছি।’

ইসরায়েলের অর্থনৈতিক কেন্দ্র তেল আবিবের পৌর পরিষেবাগুলোও সোমবারের এই ধর্মঘটে বন্ধ থাকবে। ইসরায়েলের ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, তারা এই ধর্মঘটকে সমর্থন করেছে এবং বন্দিদের জীবিত ফিরিয়ে আনতে সরকার তার ‘নৈতিক দায়িত্ব’ পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে।

এদিকে ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নেতানিয়াহু ও তার মৃত মন্ত্রীপরিষদের কারণে বন্দিরা জীবিত ফিরতে পারেননি।

অবশ্য ছয় বন্দির মরদেহ উদ্ধারের পর চাপে পড়ে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন নেতানিয়াহু। তিনি দাবি করেছেন, গত ডিসেম্বর থেকেই হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন তিনি। কিন্তু হামাস রাজি হচ্ছে না।

তিনি বলেছেন, গত ১৬ আগস্টও যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছিল ইসরায়েল। কিন্তু হামাস এতে রাজি হয়নি।

যদিও হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী যে ছয় বন্দির মরদেহ উদ্ধার করেছে তাদের মধ্যে তিনজনকে চুক্তি হলেই মুক্তি দেওয়া হতো।

টিএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *