মুখের ভেতরে জ্বালাপোড়া কেন হয়, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

মুখের ভেতরে জ্বালাপোড়া কেন হয়, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

মুখের ভেতরের অংশ খুবই স্পর্শকাতর। সারাদিন টক-ঝাল-মিষ্টি ও ঠান্ডা-গরম নানা প্রকার খাবারের প্রবেশ ঘটে মুখে। আবার মাঝেমধ্যে দাঁতের কামড় তো লেগেই থাকে। মুখের ভেতরে রয়েছে হাই ফ্লাক্স এরিয়া, এখানে কোষগুলো দ্রুত মারা যায় ও নতুন কোষ জন্মায়। তাই মুখে ক্ষত হওয়া মোটামুটি স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু কখনো কখনো এ ধরনের ক্ষত বেশ ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ছোট ঘা থেকে হতে পারে ক্যানসার।

মুখের ভেতরের অংশ খুবই স্পর্শকাতর। সারাদিন টক-ঝাল-মিষ্টি ও ঠান্ডা-গরম নানা প্রকার খাবারের প্রবেশ ঘটে মুখে। আবার মাঝেমধ্যে দাঁতের কামড় তো লেগেই থাকে। মুখের ভেতরে রয়েছে হাই ফ্লাক্স এরিয়া, এখানে কোষগুলো দ্রুত মারা যায় ও নতুন কোষ জন্মায়। তাই মুখে ক্ষত হওয়া মোটামুটি স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু কখনো কখনো এ ধরনের ক্ষত বেশ ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ছোট ঘা থেকে হতে পারে ক্যানসার।

কেন মুখের ভেতর ঘা ও জ্বালাপোড়া হয়— এ বিষয়ে দন্ত বিশেষজ্ঞরা কিছু কারণ উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো নিচে দেওয়া হলো।

ট্রমা ইন্ডিউসড আলসার- জিভ বা গালে কামড় পড়লে এ ধরনের ক্ষত বা আলসার হয়।

অ্যাপথাস- বাচ্চা থেকে বয়স্ক সবারই এই সমস্যা হতে পারে। এতে মুখের ভেতরে লাল ফোস্কা ফেটে যাওয়ার মতো একটা ক্ষত দেখা যায়, ব্যথা হয় যা ৭-১০ দিন থাকে। মাত্র ১০% অ্যাপথাস হয় ভিটামিনের অভাবে, তাই মুখের সব আলসারে ভিটামিন খাওয়া ভালো। ফেরিটিন বা আয়রনের স্বল্পতা থেকেও কিছু কিছু আলসার হতে পারে। এর গুরুত্ব বেশি। রক্তাল্পতার জন্য মুখে আলসার চিকিৎসা না করিয়ে ফেলে রাখলে ক্যানসার হতে পারে।

ওষুধের সাইড এফেক্ট- অনেকেরই কিছু ওষুধ খাওয়ার পর পরই মুখে ঘা দেখা দেয়। এটা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে হয়। হতে পারে ‘স্টিভেন জাংশন সিনড্রোম’। এতে মুখ থেকে ঠোঁট পর্যন্ত আলসার ছড়ায়। তখন স্টেরয়েড দিয়ে রোগীকে চিকিৎসা করতে হয়।

কিডনি বা লিভারের রোগ- ইউরেমিক আলসার, কিডনির অসুখ থাকলে তাদের দেখা দেয়।

ট্রম্যাটিক আলসার- ভাঙা দাঁতের খোঁচা বারবার লাগতে লাগতে মুখের ভেতরে একই জায়গায় ক্রনিক আলসার হয়ে যায়। যা থেকে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

কেমিক্যাল বার্ন- অনেকের খুব ভুল ধারণা রয়েছে যে, দাঁতে ব্যথা হলে ওষুধ না খেয়ে গালের কাছে রেখে দিলে নাকি ব্যথা কমবে তাড়াতাড়ি। কেউ কেউ আবার চুনও লাগায়। এতে মুখে আলসার হয়ে যায়। যাকে কেমিক্যাল বার্ন বলা হয়।

লাইকেন প্লেনাস- এটাও রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি জনিত এক ধরনের মুখের আলসার। ওষুধ দ্বারা এর চিকিৎসা সম্ভব নয়। খুব ব্যথা-যন্ত্রণা হলে তখন লক্ষণ দেখে চিকিৎসা করা হয়। তবে সমস্যা ফেলে রাখা ঠিক নয়।

ওরাল ক্যানসার- ক্যানসারও অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রথমে মুখের আলসার হিসেবেই দেখা দেয়। কখনো আবার আলসার না হয়ে, লিউকোপলেকিয়া (সাদা দাগ) বা স্পেকল্ড লিউকোপলেকিয়া (সাদা দাগের মধ্যে ছোট ছোট লাল দাগ) বা এরিথ্রোপ্লেকিয়া (লাল দাগ) রূপে দেখা দেয়। যা মুখ গহ্বরে, জিভে, গালে, ঠোঁটের ভেতরে, টাগরায়, গলায় চোখে পড়ে। সবসময় এই লক্ষণ নাও থাকতে পারে। তবে দাগ দেখা গেলে তা ফেলে না রেখে চিকিৎসা করা জরুরি।

মুখ জ্বালার চিকিৎসা

ভিটামিন খেলেই মুখের আলসার ঠিক হয়ে যাবে তা কিন্তু সবসময় নয়। কিছু সীমিত চিকিৎসা নিতে হবে। আর পাশাপাশি কতদিন পর পর যন্ত্রণা হচ্ছে, কতটা জায়গায় তার ব্যাপ্তি এবং কতদিন থাকছে সেগুলো খেয়াল রাখতে হবে। রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক হলে আলসার অনেকটাই সেরে যায়। অনেক ক্ষেত্রে শরীরের প্রয়োজনীয় উপাদানের ঘাটতি থাকলে অথবা লিভার বা কিডনির সমস্যা থাকলে সেক্ষেত্রে ওষুধ দ্বারা তা ঠিক করলে আলসারও ঠিক হয়ে যায়।  

ক্যানসারজনিত আলসারে প্রি-ক্যানসারাস স্টেজে অপারেশন করাতে পারলে সবচেয়ে ভালো। ক্যানসার গলার লিম্ফ নোডে ছড়িয়ে গেলে অপারেশনের পর রেডিয়েশন দিতে হয়।

মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে মেনে চলুন এই নিয়ম

• মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সঠিকভাবে ব্রাশ করা জরুরি।• তামাক জাতীয় দ্রব্য বা সুপারি মুখের শত্রু।• সপ্তাহে একবার মুখের সেলফ এগজামিনেশন করুন।• মুখে কোনো ক্ষত যদি অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাহলে ফেলে না রেখে মুখের ওরাল সার্জন বা ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জনের পরামর্শ নিন।• দুই সপ্তাহের বেশি আলসার থাকলে সাবধান হন, সময় নষ্ট না করে প্রথমেই সঠিক চিকিৎসকের কাছে যান। মুখের অধিকাংশ আলসার ক্যানসার নয়।

এমএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *