নারায়ণগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের হেফাজতে সৈয়দ নুরুল করিম (৫৫) নামে এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের হেফাজতে সৈয়দ নুরুল করিম (৫৫) নামে এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (৮ আগস্ট) সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা একটি বাস থেকে মাদক পাচারকারী সন্দেহে সৈয়দ নুরুল কবির নামে একজনকে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এরপর গাড়িতে তুলে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি মারা যান। এরপর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নুরুল কবিরের মরদেহ খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে রেখে চলে যায়।
তবে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় নারায়ণগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ রিফাত হোসেন বলেন, ওই ব্যক্তি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকালে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা গ্রীনলাইন পরিবহনের একটি ডাবল ডেকার বাস সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে এলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে একটি টিম বাসটি থামায়। এ সময় টিমের সদসরা গাড়ি থেকে মাদক পাচারকারী সন্দেহে যাত্রী সৈয়দ নুরুল কবিরকে বাস থেকে নামিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গাড়িতে তুলে হাত বেঁধে ফেলে। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কর্মকর্তারা মারধর করে বলে অভিযোগ রয়েছে। মারধরের এক পর্যায়ে নুরুল কবির অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে প্রো অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, পরে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসে।
খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অপু সাহা সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই সৈয়দ নুরুল কবির মারা গেছেন।
এদিকে খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে গেলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মরদেহ হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
সংবাদকর্মীরা র্দীঘ তিন ঘণ্টা হাসপাতালে অপেক্ষা করলে তারা কেউ আসেনি। পরে লিংক রোডের ফতুল্লা স্টেডিয়ামের পাশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অফিসে গেলেও তারা কথা বলতে নানা টালবাহানা করে। পরে এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের কাছে মারধরের অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কুমিল্লা ও কক্সবাজারে চারটি মামলা রয়েছে। তাকে কোনো মারধর করা হয়নি।
নারায়ণগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ রিফাত হোসেন মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ওই ব্যক্তি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে কয়টি মামলা রয়েছে তা জানতে পারিনি।
মেহেদী হাসান সৈকত/এএমকে