কিশোরগঞ্জের একটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। তরিকুল ইসলামের স্থলে ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উপপরিদর্শক (তদন্ত) শ্যামল মিয়াকে।
কিশোরগঞ্জের একটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। তরিকুল ইসলামের স্থলে ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উপপরিদর্শক (তদন্ত) শ্যামল মিয়াকে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কিশোরগঞ্জ পৌর সদরে বত্রিশ এলাকার শ্রী শ্রী জিউর আখড়ায় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়। রাতে নিরাপত্তার কারণে পাহারায় ছিলেন স্থানীয় গোপীনাথ সংঘের ছেলেরা। রাত চারটা পর্যন্ত সংগঠনের পাঁচ জন সদস্য জেগে ছিলেন। এরপর থেকে ভোর পাঁচটার মধ্যে দুর্বৃত্তরা প্রতিমা ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়।
নিরাপত্তার স্বার্থে পূজা উপলক্ষ্যে মন্দিরে সিসি ক্যামেরা গতকাল বুধবার লাগানোর কথা থাকলেও বৃষ্টির জন্য তা লাগানো হয়নি। এ ছাড়াও সনাতনীদের ধর্মীয় উপসনালয়গুলোতে নিরাপত্তার জন্য গত দুই মাস ধরে পাহারা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানা যায়।
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ও গোপীনাথ সংঘের সদস্য অপু কান্তি রায় বলেন, এখানে মন্দির পাহারায় রাত চারটা পর্যন্ত আমি ছিলাম। রাতে বৃষ্টি নামার পর ভোরে ঘুমিয়ে পড়ি। আমরা পাঁচজন রচনাঘরে ঘুমিয়েছিলাম। এরপর সকাল সাড়ে ৫ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে পিন্টু সাহা দেখতে পায় মূর্তি ভাঙা। এরপর ফোন দিয়ে জানালে মন্দিরে সবাই ছুটে আসেন।
এদিকে, প্রতিমা ভাঙচুরের খবর পেয়ে সকালে জেলা প্রশাসক,পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে জেলা কালেক্টরেট মিলনায়তনে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীসহ সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিল। সভায় হিন্দু ধর্মের নেতারা অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।
গোপীনাথ সংঘ ও গোপীনাথ মন্দির পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লিটন সরকার বলেন, আমরা এলাকাবাসী মিলে পূজার আয়োজন করেছি। এই অসাম্প্রদায়িক শহরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা যারা করার চেষ্টা করছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, আমরা এই বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। এ ঘটনার পর প্রশাসনিক সমস্যাজনিত কারণে সদর মডেল থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি হিসেবে যোগদান করেন মো. তরিকুল ইসলাম।
এনামুল হক হৃদয়/এমজে