পদত্যাগ করেছেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহসিন

পদত্যাগ করেছেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহসিন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহসিন কবির পদত্যাগ করেছেন। রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগপত্রে সই করে কলেজ ছাড়েন তিনি।

অধ্যক্ষের সই করা পদত্যাগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আমি সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দয়িত্ব পালনের সময় বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থেকেছি। কলেজের শিক্ষার মান এবং অবকাঠামোর উন্নয়ন না করে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার ও অপরাজনীতি বন্ধ করতে পারিনি। সেই ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে স্বেচ্ছায় ও সজ্ঞানে পদত্যাগ করছি।

এর আগে, সকাল ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা অধ্যক্ষকে পদত্যাগ করার জন্য ১ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। এই সময় অতিবাহিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের রুমে গিয়ে তাকে পদত্যাগপত্রে সই করতে বাধ্য করেন। পরে তিনি গাড়িযোগে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে তার সেলফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

অপরদিকে, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস সংস্কারের জন্য ৭ দফা দাবি তুলে ধরেছেন। দাবিগুলো হচ্ছে —

১. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় শিক্ষার্থীদের উপর দমন নিপীড়ন, গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে এবং আহত ও গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীদের পাশে না দাঁড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানিমূলক পোস্ট করার সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে জড়িত শিক্ষক ও কর্মচারীদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

২. ক্যাম্পাসে সব লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে এবং শিক্ষার্থীবান্ধব ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।

৩. ক্যাম্পাসের নিজস্ব অর্থায়নে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কমপক্ষে ৪টি বাস কিনে শিক্ষার্থীদের পরিবহন সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. দখল হওয়া কলেজের ছাত্রাবাস দখল মুক্ত করতে হবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে।

৫. শিক্ষক সংকট নিরসন করে মানসম্পন্ন ক্লাস নিশ্চিত করতে হবে। কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে গণহারে শিক্ষার্থীরা অকৃতকার্য হলে দায়িত্বরত শিক্ষককে জবাবদিহি করতে হবে। প্রয়োজনে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ এবং স্নাতক পর্যায়ে বিভাগ ভিত্তিক আসন সংখ্যা কমাতে হবে।

৬. ক্যাম্পাসে ক্যান্টিন, লাইব্রেরি, বিভাগীয় ল্যাব এবং চিকিৎসা সেবা নিয়মিত নিশ্চিত করাসহ সকল প্রকার অবকাঠামোর দৃশ্যমান উন্নয়ন করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।

৭. শিক্ষার্থীদের থেকে সব রকম রসিদবিহীন অনৈতিক আর্থিক লেনদেন বন্ধ করতে হবে। প্রতি অর্থবছরে কলেজের বাজেট বিবরণী এবং উন্নয়ন ব্যয় সততার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সামনে নিয়মিত উপস্থাপন করতে হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি তিতুমীর সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌস আরা বেগম এবং কবি নজরুল সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগম।

আরএইচটি/এসকেডি

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *