নারায়ণগঞ্জে বৃদ্ধ দম্পতির রহস্যজনক মৃত্যু 

নারায়ণগঞ্জে বৃদ্ধ দম্পতির রহস্যজনক মৃত্যু 

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বসতঘর থেকে মো. আবুল কালাম আজাদ (৬২) ও আমেনা বেগম ময়না (৫৭) নামের বৃদ্ধ দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বসতঘর থেকে মো. আবুল কালাম আজাদ (৬২) ও আমেনা বেগম ময়না (৫৭) নামের বৃদ্ধ দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে মিজমিজি পাইনাদী রেকমত আলী স্কুলের পাশের এলাকাস্থ রোকেয়া আক্তার বিষয়টি টের পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নিতে চাইলে তাদের দুই সন্তান ও এলাকাবাসী বাধা দেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত সাড়ে ৮টা) নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলামসহ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে।

নিহত মো. আবুল কালাম মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকার খলিল মুন্সীর ছেলে ও আমেনা বেগম ময়না একই এলাকার আরব আলী শেখের মেয়ে।

নিহতদের দুই ছেলে মো. মানিক ও মো. ফয়সাল বলেন, আমাদের বাবা বক্ষব্যাধি ও ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত ছিলেন। আর মা ১৪ বছর যাবত ক্যানসার ও প্যারালাইসিসে আক্রান্ত। গুলিস্তানে আমাদের নিজস্ব একটি দোকান আছে। এই দোকানের ভাড়া দিয়েই বাবা-মা চলতেন। আর আমরা দুই ভাই পরিবার নিয়ে আলাদা বসবাস করি। তবে আজ দুপুরে বাড়ির মালিকের ফোন পেয়ে জানতে পারি আমাদের বাবা-মা দুজনই মারা গেছেন।

তারা আরও বলেন, যেহেতু বাবা-মা দুজন অসুস্থ ছিলেন তাহলে তাদের স্বাভাবিক মৃত্যুই হয়েছে। তাদের মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে দেব না।

পাইনাদী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, আবুল কালাম আজাদ দীর্ঘ ৩০ বছর এই এলাকায় বসবাস করছেন। এ ছাড়া তাকে দৈনিক মসজিদে নামাজ পড়তে দেখতাম। তার সঙ্গে এলাকার কারও কখনো ঝগড়া হতে দেখিনি।

নিহতদের পাশের ঘরের ভাড়াটিয়া মো. আতিকুল্লাহ বলেন, দুপুরে খেয়ে আমি রেস্ট নিচ্ছিলাম। এ সময় বাড়িওয়ালা আপা জানান আবুল চাচা সকাল থেকে বাসা থেকে বের হননি। এরপর তাদের দরজা খোলা পেয়ে ঢুকে দেখি  চাচা-চাচি খাটে শুয়ে আছেন এবং তাদের মুখ খোলা ছিল।

তিনি আরও বলেন, আবুল চাচা ও তার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। গতকাল রাতেও চাচা প্রচুর বমি করেছিলেন।

বাড়ির মালিক রোকেয়া আক্তার বলেন, সকাল থেকে আবুল  চাচাকে ঘর থেকে বের হতে দেখিনি। প্রতিদিন সকালে তিনি কয়েকবার ঘর থেকে বের হতেন। আজ না দেখে আমার সন্দেহ হয়, এরপর দরজা খুলে দেখি তারা দুজনই মারা গেছেন। এরপর আমি থানায় কল করলে পুলিশ আসে। একই সময় তাদের দুই ছেলেকে ফোন করে জানাই। আবুল চাচা ও তার স্ত্রী দুজনই অনেকদিন রোগে ভুগছিলেন। চাচির প্যারালাইসিস থাকায় তার দেখাশুনাও আবুল চাচা করতেন।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, মৃতদের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তারা মূলত দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ হয়ে বাসায় ছিলেন। তবে কী কারণে মৃত্যু হয়েছে সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা সম্ভব হবে। বিকেলে তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিতে চাইলে এলাকাবাসী বাধা দেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. তরিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখেছি। মৃতরা দুজন বয়স্ক ব্যক্তি। যেহেতু দুজন একসঙ্গে মারা গেছেন এজন্য আমরা নিশ্চিত হতে সিআইডিকে কল করেছি। এরপর আমরা সিদ্ধান্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

এমজেইউ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *