ধেয়ে আসছে হ্যারিকেন মিল্টন, আঘাত হানবে কখন?

ধেয়ে আসছে হ্যারিকেন মিল্টন, আঘাত হানবে কখন?

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় আঘাত হানতে চলেছে শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড় হ্যারিকেন মিল্টন। এই হ্যারিকেনটি এতটাই শক্তিশালী যে, এটির প্রভাবে ফ্লোরিডার টাম্পা বে-তে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় আঘাত হানতে চলেছে শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড় হ্যারিকেন মিল্টন। এই হ্যারিকেনটি এতটাই শক্তিশালী যে, এটির প্রভাবে ফ্লোরিডার টাম্পা বে-তে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা ফ্লোরিডা উপকূলে হ্যারিকেন মিল্টনের জেরে সম্ভাব্য জীবন-হুমকি সৃষ্টিকারী প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করছেন। মূলত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্তর আটলান্টিকে তৈরি হওয়া সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে মিল্টন।

হ্যারিকেন হেলেন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক তাণ্ডব ও ক্ষয়ক্ষতি করার মাত্র দুই সপ্তাহ পরে এই হ্যারিকেনটি আঘাত হানতে চলেছে। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হ্যারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) আশঙ্কা করছে, মিল্টন স্থানীয় সময় বুধবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে “অত্যন্ত বিপজ্জনক হ্যারিকেন” হিসেবে আঘাত হানবে। হ্যারিকেনটি টাম্পা শহরের কাছে আঘাত হানতে পারে। এই শহরের বৃহত্তর মেট্রোপলিটন এলাকার জনসংখ্যা ৩০ লাখেরও বেশি।

পূর্বাভাসকারীরা মুষলধারে বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা, প্রবল বাতাস এবং সম্ভাব্য ঝড়-বৃষ্টির সতর্কবার্তা দিচ্ছেন। তারা বলছেন, গত প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে এই অঞ্চলে আঘাত হানা সবচেয়ে খারাপ ঝড় হতে পারে মিল্টন। শক্তিশালী এই হ্যারিকেনের তাণ্ডবে ১০-১৫ ফুট (৩-৪.৫ মিটার) উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস এবং স্থানীয়ভাবে দেড় ফুট পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে।

পৃথক প্রতিবেদনে ভয়েস অব আমেরিকা বলছে, ক্যাটাগরি ৫ ঝড় এবং ২৬৫ কিলোমিটার বেগের বাতাস ঘণ্টায় ১৪ কিলোমিটার বেগে ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলের প্রায় পুরোটাই মঙ্গলবার হারিকেন সতর্কতার আওতায় ছিল। মেক্সিকো উপসাগরের উষ্ণ পানি থেকে এটি শক্তি সঞ্চয় করছে।

রেকর্ডে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী আটলান্টিক হ্যারিকেন হলো ১৯৮০-র অ্যালেন, এটির গতিবেগ টেক্সাস এবং মেক্সিকোতে আঘাত হানার আগে ক্যারিবিয়ান এবং উপসাগরের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় ৩০৬ কিলোমিটারে পৌঁছেছিল।

হ্যারিকেন মিল্টনের কেন্দ্র বুধবার টাম্পা বে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে সেখানে বড় কোনও হ্যারিকেন সরাসরি আঘাত হানেনি।

পূর্বাভাসকারীরা সতর্ক করে দিয়েছেন, মিল্টনের কারণে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। উপসাগরীয় উপকূল বরাবর বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়ার আদেশ জারি করা হয়েছে। ফ্লোরিডায় এর অর্থ হলো— যার যার দায়িত্ব তার তার এবং জরুরি উদ্ধারকারীরা ঝড়ের উচ্চতার কারণে সেখানে বসবাসকারীদের উদ্ধার করতে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নেবে বলে আশা করা যায় না।

গত সোমবার যে কয়েকজন বাসিন্দাকে পাওয়া গেছে তারা তাদের ভবন এবং জিনিসপত্র রক্ষার জন্য রীতিমতো সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে দৌড়াচ্ছিলেন। কেউই সেখানে থাকতে চাইছিলেন না।

প্রসঙ্গত, মাত্র দুই সপ্তাহের কিছু সময় আগেই ভয়াবহ হ্যারিকেন ‘হেলেন’ দক্ষিণ-পূর্ব যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। ২০০৫ সালে আঘাত হানা হ্যারিকেন ক্যাটরিনার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঝড় ছিল এটি। এতে অন্তত ২২৫ জন মানুষ নিহত হন। শত শত মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

শুধু ফ্লোরিডায় অন্তত ১৪ জন মারা গেছেন। ওই হ্যারিকেনের তাণ্ডবে প্রাণহানির পাশাপাশি বিগ বেন্ড ও আশপাশের এলাকার অসংখ্য গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটিও উপড়ে পড়ে। একইসঙ্গে বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি শত শত রাস্তা পানিতে ডুবে যায়।

আর এবার হ্যারিকেন মিল্টনের প্রভাবে ফ্লোরিডার মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে। এমন অবস্থায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলের সব মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

টিএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *