প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে শাকিবের মামলা খারিজ

প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে শাকিবের মামলা খারিজ

প্রযোজক মোহাম্মদ রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে চিত্রনায়ক শাকিব খানের আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়নি। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রযোজক মোহাম্মদ রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে চিত্রনায়ক শাকিব খানের আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়নি। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

বাদীপক্ষ নারাজির আবেদন করলেও তদন্তে পর্যাপ্ত উপাদান না থাকায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এই মামলাটি খারিজ করে দেন। এতে প্রযোজক রহমত উল্লাহ মামলার দায় থেকেও অব্যাহতি পেয়েছেন। তবে এ মামলার পুনরায় তদন্ত চেয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন শাকিবের আইনজীবী। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত করে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে মোহাম্মদ রহমত উল্লাহের বিরুদ্ধে বাদীর আনা অভিযোগ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ২৪/২৫/২৯ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। পরে এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করেন শাকিবের আইনজীবী খায়রুল হাসান। গত ১ সেপ্টেম্বর অসুস্থ থাকায় নারাজিতে উপস্থিত ছিলেন না শাকিব খান। এজন্য বাদীপক্ষ নারাজির প্রদানে সময়ের আবেদন করেন। তবে ওইদিন ট্রাইব্যুনাল সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে মামলাটি খারিজ করে দেন। 

পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাদী চিত্রনায়ক শাকিব খানের আনা অভিযোগ পর্যালোচনা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ মামলা সংক্রান্তে বাদীর দেওয়া পেন ড্রাইভ আলামত হিসাবে জব্দ করা হয়। দালিলিক সাক্ষ্য পর্যালোচনা করা হয়েছে। বাদীর আনা অভিযোগে উল্লিখিত ‘ইউআরএল’ সমূহে তদন্তকালীন সময়ে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রবেশ করে কোন প্রকার তথ্য পাওয়া যায়নি। এতে ‘ইউআরএল’ সমূহ পরীক্ষা করে কোনো তথ্য পাওয়া যাবে না বলে তা পরীক্ষা করার প্রয়োজন বোধ করিনি। বাদীর দুজন সাক্ষীসহ নিরপেক্ষ আরও দুজন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। আরও সাক্ষী জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করা হয়েছে। মামলাটি সার্বিক তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়নি। 

২০২৩ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন চিত্রনায়ক শাকিব খান। ওইদিন ট্রাইব্যুনাল মামলাটি গ্রহণ করে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি রহমত উল্লাহ বাদী শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন। শিডিউল না দেওয়াসহ নানা অভিযোগ করেন। আসামি আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করে শাকিবকে সামাজিকভাবে অপমান অপদস্থ ও হেয়প্রতিপন্ন করেন। আসামি নিজেকে প্রযোজক হিসাবে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করে শাকিবের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছেন।

মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামি রহমত উল্লাহ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে মানসম্মানের তোয়াক্কা না করে প্রতারণায় উদ্দেশ্যে মিথ্যা পরিচয় ধারণ করে আক্রমণাত্মক, মিথ্যা তথ্য উপাত্ত ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করে উল্লেখিত ডিজিটাল ডিভাইস, ডিজিটাল সিস্টেম বা ডিজিটাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রকাশ করেন। মামলার সাক্ষীরা মানহানিকর ও মিথ্যা বক্তব্যগুলোর লিংক পাঠালে শাকিব মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরবর্তীতে শাকিব আসামি রহমত উল্লাহের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্য জানার জন্য এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ভিত্তিহীন স্ট্যাটাস ডিজিটাল ডিভাইসে প্রচার না করার জন্য যোগাযোগ করেন। আসামী ক্ষিপ্ত হয়ে বলে যে ‘সমাজে তোর মানসম্মান রাখব না, তোর ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিব। ভবিষ্যতে তার চেয়েও ভয়াবহ বক্তব্য প্রকাশ করিব।’ 

পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন বলেন, এ মামলায় জমা দেওয়া পেনড্রাইভে যে লিংক ছিল, সেগুলো ওপেন করতে পারেননি। যেহেতু আমি পারেনি, সেটা ফরেনসিক পরীক্ষায় দিলেও পাবেনা। তাই এ মামলার অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছি। 

শাকিব খানের আইনজীবী খায়রুল হাসান বলেন, এই মামলার নারাজির ধার্য তারিখে সময়ের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে মামলাটি খারিজ করে দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি।

সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আদালতে আসেন না। তাই এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

এনআর/এসকেডি

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *