বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম তো বটেই, আলোচিত ও বর্ণিল এক চরিত্র সাকিব আল হাসান। বাইশ গজে দীর্ঘদিন রাজত্ব করেছেন তিনি। তবে রাজনীতির ক্যারিয়ারটা ক্রিকেটের মতো দাপুটে হলো না বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের। রাজনীতিতে নাম লেখানোই এখন তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম তো বটেই, আলোচিত ও বর্ণিল এক চরিত্র সাকিব আল হাসান। বাইশ গজে দীর্ঘদিন রাজত্ব করেছেন তিনি। তবে রাজনীতির ক্যারিয়ারটা ক্রিকেটের মতো দাপুটে হলো না বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের। রাজনীতিতে নাম লেখানোই এখন তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তবে মাত্র ৭ মাসের মাথায় গণ আন্দোলনের মুখে পতন হয়েছে সেই সরকারের। ফর্মটাও পক্ষে কথা বলছে না আগের মতো। এরই মধ্যে ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ চলাকালে ক্রিকেটের বনেদি ফরম্যাট টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব।
আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হবে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজের ২য় ও শেষ টেস্ট। তার আগে আজ (বৃহস্পতিবার) কানপুরে বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার জানিয়ে দিলেন, টি-টোয়েন্টিতে নিজের শেষ ম্যাচটা এরই মধ্যে খেলে ফেলেছেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটের বিদায়টা তিনি নেবেন দেশের মাটি থেকে। অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে শেষবার বাংলাদেশের হয়ে সাদা পোশাকে দেখা যাবে তাকে।
অবসরের কথা জানিয়ে সাকিব প্রেস কনফারেন্সে বলেন ‘আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টিতে আমি আমার শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছি, মিরপুর টেস্টে (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) খেলতে পারলে সেটি হবে আমার শেষ টেস্ট’।
অবশ্য দেশে ফেরা নিয়ে সাকিবের কিছু ‘ঝামেলা’ আছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার একটি মামলার আসামি তিনি। দেশে ফিরলে গ্রেপ্তার বা অন্যভাবে হয়রানির একটা শঙ্কা আছে।
সাকিব জানান, এ ব্যাপারে বিসিবির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তিনি। দেশে ফিরতে এজন্য কিছু শর্তও জুড়ে দিয়েছেন।
সাকিব বলছিলেন, ‘আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোনো সমস্যা না হয়। বোর্ড খেয়াল রাখছে, বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবেন, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারব।’
দেশের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানো প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘আমার কাছে দেশের সমর্থকদের সামনে টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করাটা উপযুক্ত হবে বলে মনে হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে এবং এই ফরম্যাটের শেষটা আমি ঘরের মাঠেই করতে চাই। আমি বিসিবির কাছে নিজের শেষ টেস্টটি মিরপুরে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছি। যদি তা না হয়, তাহলে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিই আমার শেষ টেস্ট হবে।’
নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত ও দেশে ফেরা নিয়ে বিসিবির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে সাকিবের। তিনি বলেন, ‘দেখুন, এখন পর্যন্ত আমি তো অ্যাভেইলেবল। দেশে যেহেতু অনেক পরিস্থিতি আছে, সবকিছু অবশ্যই আমার ওপর নির্ভর করছে না। আমি বিসিবির সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা করেছি। তাদেরকে বলা হয়েছে আমার কী পরিকল্পনা। এই সিরিজ আর হোম সিরিজটা আমি ফিল করেছিলাম আমার শেষ সিরিজ হবে, টেস্ট ক্রিকেটে স্পেশালি।’
‘এভাবেই ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে ও নির্বাচকদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যদি সুযোগ থাকে, আমি যদি দেশে যাই, খেলতে পারি, তাহলে মিরপুর টেস্ট হবে আমার জন্য শেষ। সেই কথাটা বোর্ডের সবার সঙ্গে বলা হয়েছে। তারা চেষ্টা করছেন কীভাবে সুন্দরভাবে আয়োজন করা যায়’- যোগ করেন সাকিব।
এফআই