ডিসি পদ নিয়ে সচিবালয়ে হট্টগোল : শাস্তি পাচ্ছেন ১৭ উপসচিব

জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদ নিয়ে সচিবালয়ে হট্টগোলের ঘটনায় ১৭ জন উপসচিবকে শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করেছে এ ঘটনায় গঠিত কমিটি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

সিনিয়র সচিব বলেন, গত ১০ ডিসেম্বর আমাদের মন্ত্রণালয়ে একটি আনরেস্ট (অসন্তোষ) হয়েছিল। সেটার জন্য এক সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এটার প্রধান ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ। তার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকেও প্রতিবেদন পাওয়া গেছে, সাক্ষী-প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সচিব বলেন, ১৭ জনকে তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তিনটি পর্যায়ে তিনি সাজেস্ট করেছেন কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। আটজনের বিষয় বলা হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করে গুরুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। চারজনের বিষয় বলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে বিধি-বিধান অনুযায়ী লঘুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। আর পাঁচজনের ব্যাপারে বলা হয়েছে, তাদের শাস্তি তিরস্কার দেওয়া যেতে পারে। তাদের সাবধান করা, যাতে ভবিষ্যতে এটা না করে।

১৭ জনের সবাই উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা জানিয়ে তিনি বলেন, এ কর্মকর্তাদের কারো নাম জানার দরকার নেই।

তিনি বলেন, এটা হলো আমাদের ফাইন্ডিংস। একজন সরকারি কর্মকর্তা যখন এই বিষয়গুলো ফেস করে তখন অনেকগুলো স্টেজ আছে, সেগুলো সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। একটা পর্যায়ে দেখা যায় অনেকের সংশ্লিষ্টতা ছিল, আবার অনেকের ছিল না। আবার অনেক সময় দেখা যায় নিঃস্বার্থ ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। এ রকম হয়ে গেলে অনেক সময় আমরা সেগুলো দেখি। এখন এই বিষয়গুলো প্রসেস করা হবে। কারণ জাতি, মানুষ জানতে চায়। আমি ডিসি হতে পারিনি, সেজন্যই এরকম একটা আন্দোলন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে, এটা কেউ ভালোভাবে নেয়নি। 

সিনিয়র সচিব বলেন, আমাদের সিনিয়র কলিগরা নেয়নি, কলিগরা নেয়নি, আমাদের জুনিয়র কলিগরা নেয়নি সর্বোপরি আপনারা নেননি এবং সত্যি কথা বলতে কি, জনগণ নেয়নি। অনেকে বলছে এগুলো যদি কঠোর হস্তে দমন না করেন, ব্যবস্থা না নেন, আমাদের প্রশাসন ভেঙে পড়বে শৃঙ্খলা থাকবে না। প্রশাসনের একটি বড় দিক হলো শৃঙ্খলা। শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় যা যা করার… আমিও আইনের ঊর্ধ্বে না আপনারাও আইনের ঊর্ধ্বে নন, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী গুরু এবং লঘুদণ্ড দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র সচিব।

জড়িত কারো বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এমন কেউ আছেন কিনা- এ বিষয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, একজন যুগ্মসচিব ছিলেন, তাকে ইতিমধ্যে সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার করে বদলি করা হয়েছে। উনি কিছু ওভার অ্যাক্ট করেছিলেন, এজন্য সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা অ্যাক্ট করব, ওভার অ্যাক্ট করতে পারি না।

এসএইচআর/জেডএস