জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শিগেরু ইশিবা

জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শিগেরু ইশিবা

জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। দলের অভ্যন্তরে রান অফ ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এবং কট্টর জাতীয়তাবাদপন্থি নেতা সানায়ে তাকাইচিকে পরাজিত করে দেশের সরকারপ্রধানের পদ নিশ্চিত করেছেন ৬৭ বছর বয়সী ইশিবা। শুক্রবার হয়েছে এই রান অফ ভোট।

জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। দলের অভ্যন্তরে রান অফ ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এবং কট্টর জাতীয়তাবাদপন্থি নেতা সানায়ে তাকাইচিকে পরাজিত করে দেশের সরকারপ্রধানের পদ নিশ্চিত করেছেন ৬৭ বছর বয়সী ইশিবা। শুক্রবার হয়েছে এই রান অফ ভোট।

শুক্রবার রান অফ ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় আবেগাক্রান্ত ইশিবা বলেন, “আমাদের অবশ্যই জনগণের ওপর আস্থা রাখতে হবে, সত্য বলতে হবে, সাহসী এবং দায়িত্বশীল হতে হবে এবং জাপানকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”

প্রসঙ্গত, গত ১৪ আগস্ট টোকিওতে এক সংবাদ সম্মেলনে জাপানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ঘোষণা দেন যে তিনি সরকারপ্রধান এবং নিজের রাজনৈতিক দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সাংবিধানিকভাবে কিশিদার আরও ১৩ মাস সময় ছিল; কিন্তু দলের কয়েক জন আইনপ্রণেতার দুর্নীতি কেলেঙ্কারি এবং সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয়ে উল্লম্ফণ ঘটায় কিশিদা এবং তার দল এলডিপির জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছিল জাপানে। জুলাই মাসে এক জরিপে দেখা যায়, জাপানের মাত্র ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ কিশিদাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। মূলত ওই জরিপের ফলাফল প্রকাশের পরই সরকার ও দলীয়প্রধানের পদ থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।  

টোকিওর সেই সংবাদ সম্মেলনে কিশিদা আরও বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে এলডিপি নতুন একজন শীর্ষ নেতা বেছে নেবে, ‍যিনি সরকারের বাকি মেয়াদ পূরণ করবেন এবং আসন্ন নির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দেবেন। তার সেই ঘোষণা অনুযায়ী সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার আগেই জাপানের নতুন সরকারপ্রধান নির্বাচনের কাজ শেষ হলো, এখন বাকি শুধু আনুষ্ঠানিকতা।

জাপানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে শিগেরু ইশিবার অবস্থান বেশ স্বতন্ত্র। একদিকে সাধারণ জনগণের কাছে জনপ্রিয়, আবার অন্যদিকে বিভিন্ন ইস্যুতে দলে নিজের সতীর্থ রাজনীতিবিদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ার একাধিক রেকর্ড রয়েছে তার। এর আগেও চার বার তিনি এলডিপির প্রেসিডেন্টের পদের জন্য প্রার্থিতা করেছেন, কিন্তু দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছেন। কিশিদা সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর ইশিবা বলেছিলেন, এবার শেষবারের মতো দলীয় প্রধানের পদের জন্য প্রার্থিতা করবেন তিনি। সেই হিসেবে ৫ম বারের চেষ্টায় সফল হলেন ইশিবা।

গত দশকের আশির দশকের শুরুর দিকে ব্যাংকে চাকরি গ্রহণের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন ইশিবা। ১৯৮৬ সালে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে এলডিপিতে যোগ দেন দেন তিনি।

এই মূহূর্তে ইশিবার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ দু’টি— জনসাধারণের জীবনযাত্রার ব্যয় সংকোচন এবং পররাষ্ট্র নীতি। পররাষ্ট্র নীতি তার জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ এই কারণে যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকাকালে তিনি একাধিকবার বলেছেন যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর এশীয় সংস্করণের পক্ষে। যদি সত্যিই তিনি এই উদ্যোগ নেন, তাহলে বেইজিংয়ের সঙ্গে টোকিওর সম্পর্কের গুরুতর অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। আর বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি এশিয়ার আঞ্চলিক রাজনীতিতে জাপানের সামনে অনেক নতুন সমস্যাসৃষ্টি করবে বলে মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *