খাদ্য নিরাপত্তা ও পরিবেশগত টেকসই চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে বৃহৎ জনসংখ্যার খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এসব সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনের স্থিতিশীলতা অর্জনে জৈব প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করা হবে। এই গবেষণার মাধ্যমে জৈব প্রযুক্তির (সৌর বিদ্যুৎ, বায়ু বিদ্যুৎ) চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে জৈব বর্জ্যের (বায়োগ্যাস) গুরুত্ব মূল্যায়ন করা হবে। এর মাধ্যমে খাদ্য ও কৃষির জৈব বর্জ্য বিকল্প শিল্পে রূপান্তরিত হতে পারবে, যার দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা পুনঃব্যবহারযোগ্য অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখবে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ‘গ্রামীণ অর্থনীতিতে জৈব বর্জ্য মূল্যায়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন যুক্তরাজ্যের কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের শিক্ষক ড. থমাস হেস্টিংস। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের যৌথ উদ্যোগে দুই বছর মেয়াদি গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালিত হবে। ড. থমাস গবেষণা প্রকল্পটির প্রধান গবেষক হিসেবে কাজ করবেন।
ড. থমাস আরও বলেন, গবেষণাটিতে প্রাথমিকভাবে বায়োগ্যাস উৎপাদন, কম্পোস্টিং এবং এই প্রক্রিয়াগুলোতে ব্যবহৃত প্রযুক্তিগুলোর ব্যবহার সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে এবং গ্রামীণ এলাকার শিল্পের বিকাশের প্রতি আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে জৈব প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা আছে।
এই গবেষণার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, শস্য উৎপাদনের জন্য কার্যকর সার তৈরি এবং বাংলাদেশে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করার জন্য সম্ভাবনা মূল্যায়ন করা, বিভিন্ন টেকসই উৎপাদনে জৈব প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও প্রাতিষ্ঠানিক কর্তা-ব্যক্তিদের ভূমিকা মূল্যায়ন করা, অন্যান্য টেকসই উৎপাদন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও সুযোগগুলো শণাক্ত করা, একই সাথে জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়োগ্যাস উৎপাদন ও কম্পোস্টিংয়ের গুরুত্ব পরীক্ষা এবং শিল্প উদ্যোক্তাদের পুনঃব্যবহারযোগ্য অর্থনীতির সাথে এসব প্রযুক্তির সম্পৃক্ততা মূল্যায়ন, জৈব প্রযুক্তির বিস্তারে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং অংশীদারদের আগ্রহ যাচাই; খাদ্য উৎপাদন চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষিতে সবুজ প্রযুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও সুযোগগুলো শণাক্ত করা এবং সে অনুযায়ী নীতি নির্ধারনী ঠিক করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রাব্বানী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম। এ ছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন কুইন্স ইউনিভার্সিটি ব্রিসকেটের শিক্ষক ও গবেষণা প্রকল্পের সহযোগী গবেষক ড. পল এন উইলিয়ামস।
এনএফ