মরণঘাতি ক্যান্সার প্রথম পর্যায়ে ধরা পড়লে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নির্মূল করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অসুখ যদি আরও ডালপালা মেলে, তখন কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
মরণঘাতি ক্যান্সার প্রথম পর্যায়ে ধরা পড়লে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নির্মূল করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অসুখ যদি আরও ডালপালা মেলে, তখন কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
কেমোথেরাপি করে শরীরের ভেতর ক্যান্সার-আক্রান্ত কোষগুলোকে নষ্ট করে দেওয়া হয় ঠিকই, কিন্তু এর সঙ্গে কিছু সুস্থ কোষও বিনষ্ট হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় রক্তের শ্বেতকণিকা। ফলে শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ শক্তি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। অল্পেই দুর্বলতা, সংক্রামক অসুখবিসুখ সহজেই হানা দেয়। তাই কেমোথেরাপির চিকিৎসা চলাকালে একটু বেশিই সতর্ক থাকতে হবে রোগীকে। জেনে নিন, কী কী নিয়ম মেনে চললে সুস্থ থাকা যাবে।
পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। হাত ধুয়ে খাবার খাওয়া উচিত। বাইরে থেকে ফিরলে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে অথবা স্যানিটাইজ করতে হবে। সঙ্গে সব সময়ে স্যানিটাইজার রাখা ভালো।
প্রতিদিন গোসল করতে হবে। দিনে অন্তত দুই থেকে তিনবার ব্রাশ করা জরুরি। কেমোথেরাপির সময় অনেকেরই মুখের ভেতর ফুসকুড়ি বা জিভে ঘা হয়। সেক্ষেত্রে সবসময় খাওয়ার পরই মুখ কুলকুচি করতে হবে। মুখে ঘা হলে অ্যান্টিসেপ্টিক মাউথওয়াশ ব্যবহার করে সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অতিরিক্ত গরম চা, কফি, বেশি ঝাল-মশলা ও লবণ দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
কেমোথেরাপিতে ক্যান্সারের কোষ ধ্বংসকারী ওষুধ রক্তের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। এই ওষুধের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। খিদে কমিয়ে দেয়, ঘুম নষ্ট হতে পারে, কিছু খেলেই বমি বমি ভাব হয়। তাই এসময়ে খাবার খেতে হবে পরিমিত। একবারে ভারী খাবার খেলে বমি হয়ে যেতে পারে। হাতের কাছে আদা কুচি বা পুদিনা পাতা রাখতে পারেন। বমি ভাব হলে ওষুধ না খেয়ে আদা বা পুদিনা পাতা চিবোলে সমস্যা দূর হবে। পুদিনা পাতার রস হজমশক্তি বাড়াবে, বেশি ভাজাভুজি খাওয়ার ইচ্ছা চলে যাবে।
সংক্রমণ ও জ্বরের প্রবণতা বাড়ে এসময়ে। স্বাদ-গন্ধের অনুভূতিও চলে যেতে পারে সাময়িকভাবে। জ্বর হলেই নিজে থেকে ওষুধ খাবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনোরকম ওষুধ খাওয়া বা সাপ্লিমেন্ট নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
কেমোথেরাপি চলার সময়ে মুখের ভেতরের লালাগ্রন্থির কাজ কিছুটা ব্যাহত হয় বলে মুখের লালা নিঃসরণ কমে যায়। তাই খাবার গিলতে কষ্ট হয়। তাই এসময়ে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। বাড়িতে তৈরি শরবত, টাটকা ফলের রস বারবার খেতে হবে। কিন্তু দোকান থেকে কেনা প্যাকেটজাত ফলের রস বা বেশি চিনি দেওয়া পানীয় একেবারেই খাওয়া ঠিক হবে না। তামাকজাত নেশা বন্ধ করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে, প্রতিদিনের ডায়েটে টাটকা শাকসবজি, ফল, গ্রিন টি, ছোট মাছ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বাড়বে।
এসএসএইচ