কোটা সংস্কার আন্দোলনে সড়ক বাতি বন্ধ করে গুলি করার অভিযোগ উঠেছিল। ওই সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিদ্যুৎ উপবিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ঝুলন কুমার দাশকে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি।
চসিক সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতা বুধবার দুপুরে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে তারা দুটি দাবি জানান। সেই দাবিগুলো হলো ৩ থেকে ৫ আগস্ট ঝুলন কুমার দাশের নির্দেশনায় নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশে সড়ক বাতি নেভানো ছিল, যার ফলে আন্দোলনরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা নিরাপত্তাহীনতার শিকার হন। এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতারা ঝুলন কুমার দাশের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন দুর্নীতির প্রকাশিত সংবাদ উপস্থাপন করেন। তারা বেলা ৩টা থেকে ১ ঘণ্টার মধ্যে ঝুলন কুমার দাশকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা না হলে সংবাদ সম্মেলন করে তার বিভিন্ন দুর্নীতির তথ্য গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরার ঘোষণা দেন। এরপরই ঝুলন দাশকে সাময়িক বরখাস্তর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ৩ আগস্ট চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষের সময় মেয়রের বাড়ির পাশে থাকা বহদ্দারহাট-নতুন চান্দগাঁও সড়কের বাতি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। এর মধ্যে মো. শহীদ (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চসিকের বিদ্যুৎ উপ-বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (অ. দা.) ঝুলন কুমার দাশকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে৷ ঝুলন কুমার দাশের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে প্রকাশিত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে জরুরি তদন্ত করার জন্য প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমীকে আহ্বায়ক ও আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমকে সদস্যসচিব করে তিনি সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্য হলেন, আইন কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন।
এছাড়া মেয়রের একান্ত সহকারী হোসেন আওরঙ্গজেব শিবলু মঙ্গলবার চাকরি থেকে অব্যাহতির আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘ছাত্ররা লিখিতভাবে আরও কিছু দাবি জানিয়েছেন সেগুলোও গ্রহণ করা হয়েছে।
এমআর/এসকেডি