একপাশে মেঘালয় আর অন্যপাশে পূর্ব আকাশে উদিত সূর্যের রক্তিম আলোকে হার মানিয়ে জলের বুকে ফুটে উঠেছে লক্ষাধিক শাপলা। দূর থেকে দেখে মনে হবে এ যেন জলের বুকে কেউ লাল শাপলার চাদর মুড়িয়ে দিয়েছে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই ফুটতে শুরু করা এসব শাপলা দেখতে ছুটে আসেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের কাশতাল গ্রামের পাশে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন লাল শাপলার বিলে দেখা মেলে এমন সৌন্দর্য।
একপাশে মেঘালয় আর অন্যপাশে পূর্ব আকাশে উদিত সূর্যের রক্তিম আলোকে হার মানিয়ে জলের বুকে ফুটে উঠেছে লক্ষাধিক শাপলা। দূর থেকে দেখে মনে হবে এ যেন জলের বুকে কেউ লাল শাপলার চাদর মুড়িয়ে দিয়েছে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই ফুটতে শুরু করা এসব শাপলা দেখতে ছুটে আসেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের কাশতাল গ্রামের পাশে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন লাল শাপলার বিলে দেখা মেলে এমন সৌন্দর্য।
জেলা প্রশাসন কর্তৃক ঘোষিত সম্ভাবনাময় এ পর্যটন স্পট বিকি বিল বা শাপলার বিল নামে বহুল পরিচিত। গত কয়েক বছর ধরেই এ বিলের লাল শাপলার অপরূপ সৌন্দর্য স্বাগত জানিয়ে আসছে প্রকৃতিপ্রেমী দর্শনার্থীসহ সবাইকে।
সম্প্রতি তিন দফা বন্যা বিকি বিলের সৌন্দর্যের ওপর কিছুটা প্রভাব ফেলেছে। পাশাপাশি গরু-মহিষের খাদ্যের জোগান দেওয়ায় জন্য অবাধে বিল থেকে প্রতিদিন লাল শাপলার ডাটা উপড়ে নিচ্ছেন গ্রামের স্থানীয়রা। এতে দিন দিন হারাতে বসেছে লাল বিকি বিলের অপরূপ সৌন্দর্য। বিকি বিলের সৌন্দর্য রক্ষায় প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন সেখানে আশা দর্শনার্থীরা।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে লাল শাপলার বিকি বিলকে হাওর পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় এলাকা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন সুনামগঞ্জের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ। পরে পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য নতুন এলাকা হিসেবে বিকি বিলে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় ১৪ দশমিক ৯৫ একর জায়গা নিয়ে গঠিত এই বিলের প্রাকৃতিকভাবেই জন্মায় শাপলা। বিকি বিলে লাল শাপলার পাশাপাশি জন্মে সাদা ও বেগুনি রঙের শাপলাও।
বিকি বিল ঘুরতে আশা অমিও হাসান জানান, এখানে এলেই মন জুড়িয়ে যায়। অনেকে রাস্তা না চেনার কারণে আসেন না। এখানে পুরো বিলটা লাল শাপলায় ভরে থাকে। সরাসরি না দেখা পর্যন্ত এই সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে না।
আরেক দর্শনার্থী মিন্নাত জানান, মেঘালয় পাহাড়ের পাশেই এই বিকি বিলে বার বার আসতে মন চায়। এ জন্য বারবার এখনে আসি। পাহাড় আর লাল শাপলার এই সমারোহ আমাকে বার বার এখানে নিয়ে আসে।
স্থানীয় বলছেন, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দিন দিন জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে বিকি বিল। এই বিলের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য রাস্তাঘাটের উন্নয়নের পাশাপাশি গরুর খাদ্যের জোগান দিতে স্থানীয়দের শাপলা কেটে নিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা কামাল হোসেন জানান, গত ৪-৫ বছর ধরেই এই বিল সবার কাছেই ব্যাপক জনপ্রিয়। কিন্তু রাস্তা ভাঙা থাকার কারণে অনেকে এখানে আসতে চান না। বিকি বিলের সৌন্দর্য রক্ষার স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানাই। এতে করে সুনামগঞ্জের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আবার জনপ্রিয়তা ফিরে পাবে এই বিকি বিল।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, আমি মাত্রই এই জেলায় এসেছি। আমরা এ ব্যাপারে কাজ করবো, এ বিষয়ে পরিকল্পনা আছে। সুনামগঞ্জের পর্যটন কেন্দ্র মানেই শুধু টাঙ্গুয়ার হাওর না। পুরো সুনামগঞ্জকে আমরা পর্যটনের রোল মডেল হিসেবে দাড় করতে চাই। হাওরের জীবন, জীবিকা ও বৈচিত্র্য রক্ষা করে পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য চেষ্টা করবো।
রায়হান আলীম তামিম/এফআরএস