শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবরে রাজধানীর বাড্ডায় বিজয় মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন নোয়াখালীর মো. রায়হান। এমন সময় হঠাৎ মাথায় ও পিঠে গুলি এসে লাগে এক তার। ঢলে পড়ে যায় মাটিতে। আর মা বলে ডাক দেয়নি আমেনা খাতুনকে। একমাত্র ছেলে সন্তানকে হারিয়ে তিনি পাগলপ্রায়।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবরে রাজধানীর বাড্ডায় বিজয় মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন নোয়াখালীর মো. রায়হান। এমন সময় হঠাৎ মাথায় ও পিঠে গুলি এসে লাগে এক তার। ঢলে পড়ে যায় মাটিতে। আর মা বলে ডাক দেয়নি আমেনা খাতুনকে। একমাত্র ছেলে সন্তানকে হারিয়ে তিনি পাগলপ্রায়।
শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে শহীদ রায়হানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ ও সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আখিনূর জাহান নীলা। এসময় ইউএনওকে জড়িয়ে অঝোরে কাঁদেন আমেনা খাতুন।
এরপর জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ পরিবারটির প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন এবং ত্রাণ ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। পাশাপাশি সব সময় পাশে থাকার ঘোষণা দেন।
মো. রায়হান নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পূর্ব দুর্গানগর গ্রামের আমজাদ হাজী বাড়ির মো. মোজাম্মেল হোসেন ও আমেনা দম্পতির একমাত্র ছেলে।
জানা যায়, রায়হান এ বছর গুলশান কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তার বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন বাড্ডায় একটা বাড়িতে কেয়ারটেকারের চাকরি করতেন। রায়হান পাশেই একটা মেসে থাকতেন। আর তার মা থাকেন নোয়াখালীতে এক ভাই এক বোনের মধ্যে রায়হান সবার বড়। গত ৫ আগস্ট (সোমবার) বাড্ডায় বিজয় মিছিলে যোগদান করলে গুলিবিদ্ধ হন রায়হান। এরপর ৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) দুপুরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আখিনূর জাহান নীলা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ রায়হানের মা আমাকে ধরে অঝোরে কেঁদেছেন। আসলে উনার একমাত্র ছেলেকে তিনি হারিয়েছেন। উনার দুঃখ কেউ বুঝবেনা। এটা অনেক কঠিন বিষয়। রায়হানের পরিবারের কথা শুনে আর্থিক সহায়তা করেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্ররা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাদের মা-বাবা সন্তানের শোকে কাতর হয়ে আছেন। শোকাহত পরিবারগুলোকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই। শুধু তাদের সঙ্গে দেখা করেছি আর সামান্য উপহার দিয়েছি। জেলা প্রশাসন সবসময় তাদের পাশে থাকবে।
রায়হানের বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোলাগুলির খবর পেয়ে আমার ছেলেকে ফোন দেই। তার ফোন এক ছেলে ধরে বলে আংকেল রায়হানকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমি হাসপাতালে হাসপাতালে পাগলের মতো খুঁজি। তারপর শেষে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে মরদেহ পাই। আমার ছেলেটার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না।
এসময় সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহনেওয়াজ তানভীরসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
হাসিব আল আমিন/এমএসএ