স্ত্রীকে খুন করে স্বামী গেলেন দুবাই, মরদেহ খেয়েছে শেয়াল-কুকুর

স্ত্রীকে খুন করে স্বামী গেলেন দুবাই, মরদেহ খেয়েছে শেয়াল-কুকুর

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় থেকে আমেনা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশ।

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় থেকে আমেনা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের ভাষ্য, স্বামীর হাতেই খুনের শিকার হয়েছেন আমেনা। তার স্বামীর নাম ইয়াসিন আরাফাত। খুনের পর পরিত্যক্ত জায়গায় ফেলা হয় আমেনার মরদেহ। সেখানে মরদেহের কিছু অংশ খেয়ে ফেলেছে শেয়াল-কুকুর।

পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে ওই নারী খুন হয়েছেন। স্বামী এ ঘটনায় জড়িত। ঘটনার দুই দিন পর বিদেশে চলে যান নিহত নারীর স্বামী ইয়াসিন আরাফাত।

নিহত নারীর বাবা কামাল উদ্দিন বলেন, আমার মেয়েকে বেড়ানোর কথা বলে আনোয়ারায় নিয়ে যায় তার স্বামী। সেখানে খুন করে মরদেহ ফেলে রেখে বিদেশে চলে যায় সে। স্বামীই আমার মেয়েকে খুন করেছে।

পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমেনার এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তার আগের সংসারে দুই সন্তান ছিল। প্রবাসী ইয়াসিন আরাফাতের সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। সেই সংসারে একটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু ইয়াসিনের পরিবার আমেনাকে মেনে নেয়নি। এ কারণে আমেনাকে নগরের বাকলিয়া তক্তারপুল এলাকায় একটি বাসায় রাখতেন।

এ বিষয়ে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন জানান, ইয়াসিন আমিরাতের দুবাই প্রবাসী। কিছুদিন আগে তিনি দেশে আসেন। স্ত্রী আমেনাকে না জানিয়ে আরেকটি বিয়ে করেন। পরে সেটি আমেনা জানতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ছিল।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে গত মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) আমেনাকে দাওয়াতের কথা বলে আনোয়ারায় নিয়ে যান স্বামী ইয়াসিন। পরে সেখানে তাকে হত্যা করেন। দুই দিন পর বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) তিনি আবার দুবাই চলে যান। ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে আনোয়ারা থানার বৈরাগ এলাকার চায়না ইকোনমিক জোন কার্যালয়ের পাশে পরিত্যক্ত একটি ইটভাটা থেকে আমেনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের ভাষ্য, শেয়াল বা কুকুর লাশের কিছু অংশ খেয়ে ফেলায় এবং মরদেহ পচে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। এ অবস্থায় পিবিআইয়ের ক্রাইম সিন ইউনিটকে পরিচয় শনাক্তের ভার দেওয়া হয়।

একদিনের মাথায় শুক্রবার (৪ অক্টোবর) পরিচয় শনাক্তের পর পিবিআই জানিয়েছে, উদ্ধার করা মরদেহটি আমেনা বেগম নামে আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী এক তরুণীর। তিনি চট্টগ্রাম নগরীর বলুয়ার দিঘির পাড় এলাকার আবুল কালাম সওদাগর কলোনির বাসিন্দা কামাল উদ্দিনের মেয়ে। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নাগেরকান্দি গ্রামে।

পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেন বলেন, ওই তরুণীর পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, ১ অক্টোবর রাত ৮টা থেকে ৩ অক্টোবর ভোর ৫টার মধ্যবর্তী কোনো সময়ে অজ্ঞাতনামা আসামি বা আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে। পরে মরদেহটি ঘটনাস্থলে ফেলে চলে যায়। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে ভুক্তভোগীর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আরএমএন/এসএসএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *