ময়মনসিংহে অবরুদ্ধ সময়ের স্মৃতি তর্পণ ও ফ্যাসিবাদবিরোধী কবিতাসংকলন অবরুদ্ধ সময়ের কবিতা পাঠ ও পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় কবিদের গল্প কথা আর অবরুদ্ধ সময়ে কবিতা পর্যালোচনায় ওঠে ফ্যাসিবাদের নির্মম নির্যাতনের নানা উপাখ্যান।
ময়মনসিংহে অবরুদ্ধ সময়ের স্মৃতি তর্পণ ও ফ্যাসিবাদবিরোধী কবিতাসংকলন অবরুদ্ধ সময়ের কবিতা পাঠ ও পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় কবিদের গল্প কথা আর অবরুদ্ধ সময়ে কবিতা পর্যালোচনায় ওঠে ফ্যাসিবাদের নির্মম নির্যাতনের নানা উপাখ্যান।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকেল পযর্ন্ত ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় কবিতা পাঠ ও পর্যালোচনা সভা।
এতে উদ্বোধনী ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কবি ও সম্পাদক এহসান হাবীব। তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার লাগামহীন গুম খুনের নেতৃত্ব দিয়েছে। ওই সময়ে আমাদের জানমালের নিরাপত্তা ছিল না।
এ সময় দেশের অন্যতম কবি ও গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়েজী বলেন, ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে যত শিশু, নারী, শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী মানুষ নিহত হয়েছে, পৃথিবীর কোনো বিপ্লবে এত মানুষ মরেনি। অথচ অনেক আওয়ামী লীগ এখনো গণহত্যা স্বীকার করে না। কিন্তু আমরা দেখেছি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা গুলি করে হত্যা করে ক্ষমা তো দূরের কথা শোকও প্রকাশ করেনি।
সভায় কবি ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সায়ন্থ সাখাওয়াৎ বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে দেশে সাময়িক সময়ের জন্য যে নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ তৈরি হয়েছে তা যেন প্রতিস্থাপিত না হয়, সে ব্যাপারে ছাত্র-জনতা রাজনীতিবিদসহ কবি, লেখক, সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদ ও গণহত্যাকারী যারা পালিয়ে যায়, তাদের আর রাজনীতি করার অধিকার থাকে না। দেশের মানুষ তাদের গ্রহণ করে না।
কবি শামশাম তাজিল বলেন, প্রথম থেকে অবরুদ্ধ সময়ের কবিতার সঙ্গে ছিলাম। অবরুদ্ধ সময়ের সম্পাদক আমাদের ডেকে রাত জেগে এই সময়টাকে অবরুদ্ধ সময় হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এ এক অসীম সাহসিকতা।
সভায় অবরুদ্ধ সময়ের কবিতার সম্পাদক এহসান হাবীবসহ অন্য বক্তারা অবিলম্বে শিল্প সাহিত্য অঙ্গণের ফ্যাসিবাদের দোসরদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। অবিলম্বে শিল্পকলা একাডেমির নবনিযুক্ত পরিচালক ও মহাপরিচালকের নিয়োগ বাতিল করতে হবে। সেইসঙ্গে প্রশাসনে আওয়ামী দোসরদের এখনো প্রাইজ পোস্টিংসহ বিভিন্ন জায়গায় পদায়ন করা হচ্ছে। এখনো অনেকেই প্রশাসনে বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে। ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া একজন রাতের ভোটের কারিগর। তাকেও অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
কবি সাম্য শাহ বলেন, শিল্প সাহিত্য অঙ্গনে যারা ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করছেন সেইসব উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতে হবে। এইসব নিয়োগ বন্ধ করতে হবে অন্যথায় ফ্যাসিবাদবিরোধী কবি শিল্পী সাহিত্যিকদের নিয়ে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেব।
কবি ও ভাবুক এনামুল হক পলাশ বলেন, আমি সরকারি চাকরি করি। সরকারবিরোধী একটি বিবৃতিতে আমার নাম থাকায় প্রত্যন্ত এলাকায় আমাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
দিনভর এই কবি আড্ডায় আরও উপস্থিত ছিলেন সরকার আজিজ, কামরুজ্জামান কামু, মালেকুল হক, আবু বকর সিদ্দিক রোমেল, মোস্তফা তারেক, পলিয়ার ওয়াহিদ, রোমেনা আফরোজ, মুহিবুর রহিম, শাদমান শাহিদ, মুহাম্মদ মোস্তাকিম বিল্লাহ, সুফি সুফিয়ান, শামশাম তাজিল, সানোয়ার রাসেল, সাম্য শাহ, সাইয়েদ জামিল, জব্বার আল নাঈম, সানাউল্লাহ সাগর, বায়েজিদ বোস্তামী, শাহেরীন আরাফাত, রাশেদ শাহরিয়ার, শফিক সাঁই, আহমেদ ইসহাক, মিলু হাসান, ওয়াহিদ রোকন, নকিব মুকশি, সালেহীন শিপ্রা, রইস মুকুল, তাজ ইসলাম, রহমান মাজিদ, তারিক ফিজার, লাবীব ওয়াহিদ, রাসেল মিয়া, আকিব শিকদার, দিপু রহমান, সাজ্জাদ হোসেন, তানজিদ আহমেদ, রুবেল মিয়া, সজিব আকন্দ, ফেরদৌসুল মনীরা লাবনী, আরাফাত রিকলে, এসএম রায়হান, তৌহিদুজ্জামানসহ অনেকে।
আমান উল্লাহ আকন্দ/পিএইচ