শরীয়তপুরে প্রতিবছর শতাধিক মণ্ডপে হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হলেও সব সময়ই ব্যতিক্রম চিত্র দেখা যায় নড়িয়া উপজেলার মসুরা ঘোষপাড়া মণ্ডপে। এ বছর মণ্ডপটি সাজানো হয়েছে দেবী দুর্গার কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসার ‘নবরূপ’ দিয়ে। নবরূপ অনুযায়ী নবদুর্গা দিয়ে ঘোষপাড়ার মণ্ডপ সাজানোয় এ বছরও মণ্ডপটি দৃষ্টি কেড়েছে সবার।
শরীয়তপুরে প্রতিবছর শতাধিক মণ্ডপে হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হলেও সব সময়ই ব্যতিক্রম চিত্র দেখা যায় নড়িয়া উপজেলার মসুরা ঘোষপাড়া মণ্ডপে। এ বছর মণ্ডপটি সাজানো হয়েছে দেবী দুর্গার কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসার ‘নবরূপ’ দিয়ে। নবরূপ অনুযায়ী নবদুর্গা দিয়ে ঘোষপাড়ার মণ্ডপ সাজানোয় এ বছরও মণ্ডপটি দৃষ্টি কেড়েছে সবার।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে মসুরা ঘোষপাড়া শ্রী শ্রী সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের মণ্ডপে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
মণ্ডপ কমিটি ও মন্দিরের পুরোহিত সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপূজাকে বলা হয় নবরাত্র ব্রত। বাংলা আশ্বিন মাসের শুক্লা প্রতিপদ থেকে শুক্লা নবমী পর্যন্ত ৯ দিন উপবাস থেকে পালন করতে হয় এ ব্রত। নবরাত্র ব্রতই মূলত দুর্গাপূজার অনুষ্ঠান। ৯ দিন উপবাস থেকে দেবী দুর্গার ৯টি বিশেষ রূপের আরাধনা করতে হয়। দেবী দুর্গার এই ৯টি বিশেষ রূপ হলো কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসার বিভিন্ন রূপ। কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসার সময় দেবী দুর্গা প্রথমে হিমালয়ের কন্যা শৈলপুত্রীর রূপ ধারণ করেন। এরপর দেবী দুর্গা ব্রহ্মচারিণী, কুষ্মাণ্ডা, স্কন্ধমাতা, কাত্যায়ণী, কালরাত্রী, মহাগৌরী হয়ে নবমীতে সিদ্ধিদাত্রীর রূপ ধারণ করেন। ঘোষপাড়া মণ্ডপটিতে দেবী দুর্গার নবরূপের প্রত্যেকটি রূপ শিল্পীর রং-তুলিতে ফুটিয়ে তোলায় মণ্ডপটি হয়ে উঠেছে ব্যতিক্রমী। ঘোষপাড়ার ব্যতিক্রমী এই মণ্ডপটি থেকে দেবী দুর্গার নবরূপের শক্তি, সাহস, সৌন্দর্যসহ হিন্দু ধর্মীয় জ্ঞান আহরণ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। মণ্ডপ থেকে ধর্মীয় জ্ঞান আহরণ করতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
স্বর্ণা দাস নামের এক দর্শনার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানে না যে, মা দুর্গার কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসার ৯টি রূপ প্রজন্মকে শেখানোর উদ্দেশ্যেই এমন আয়োজন। আমিও দেবী দুর্গার নবরূপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতাম না। মণ্ডপ থেকে নতুন প্রজন্ম দুর্গা সম্পর্কে জানতে পারছে।
অঞ্জন রায় নামের আরেক দর্শনার্থী বলেন, মায়ের ৯টি রূপকে কেন্দ্র করে মণ্ডপ উপস্থাপন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত যে কয়টি মণ্ডপ আমি দেখেছি, তার মধ্যে ঘোষপাড়ার এই মণ্ডপ আমার কাছে ব্যতিক্রম মনে হয়েছে।
তমা ঘোষ নামের আরেকজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মণ্ডপটি আমাদের বাড়ির মন্দিরের। মা যখন কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসেন, তখন তিনি মণ্ডপে সাজানো এই ৯টি রূপ নিয়েই আসেন। নতুন প্রজন্মকে ধর্মীয় জ্ঞান আহরণের সুযোগ দিতেই এমন আয়োজন হয়েছে বলে আমি মনে করি।
দর্শনার্থী তন্ময় ঘোষ ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনেকেই জানেন না যে, কৈলাস থেকে মা দুর্গা কয়টি রূপে মর্ত্যে ফিরেছেন। মণ্ডপটি থেকে আমি মা দুর্গার ৯টি রূপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছি।
শ্রী শ্রী মসুরা ঘোষপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের সহ-সভাপতি রকি দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রত্যেক বছরই আমরা ব্যতিক্রমী কিছু করার চেষ্টা করি। আমাদের ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে ধর্মের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানা ও বোঝার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ বছর আমরা নবদুর্গা দিয়ে মণ্ডপ সাজিয়েছি। এ ছাড়া শ্রী কৃষ্ণের বাল্যলীলাসহ ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দুর্গাপূজার দর্শনার্থীদের দেবীর নবদুর্গা রূপের জ্ঞান আহরণের সুযোগ তৈরি করে দিতেই এ বছর এমন আয়োজন করা হয়েছে। আশা করছি, নতুন প্রজন্ম মণ্ডপ থেকে ধর্মীয় জ্ঞান ও চেতনা ধারণ করতে পারবে।
সাইফ রুদাদ/এমজেইউ