বরিশালের সবগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

বরিশালের সবগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ভারতের ত্রিপুরার ডিম্বুর জলাধারের বাঁধ খুলে দেওয়ার পর হু হু করে পানি বেড়েছে বরিশাল বিভাগসহ দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর সবগুলো পয়েন্টে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় বেশ কয়েকটি শহর, উপজেলা সদরে পানি ঢুকে পড়েছে। পাঁচ দিন ধরে চলতে থাকা টানা বৃষ্টিতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সবগুলো নদীর পানি।

ভারতের ত্রিপুরার ডিম্বুর জলাধারের বাঁধ খুলে দেওয়ার পর হু হু করে পানি বেড়েছে বরিশাল বিভাগসহ দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর সবগুলো পয়েন্টে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় বেশ কয়েকটি শহর, উপজেলা সদরে পানি ঢুকে পড়েছে। পাঁচ দিন ধরে চলতে থাকা টানা বৃষ্টিতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সবগুলো নদীর পানি।

বুধবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোর ১২টি পয়েন্টের জল অনুসন্ধান প্রতিবেদন বলছে সবগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মূলত উজানের ঢল বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। তবে পানি দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

তাজুল ইসলাম বলেন, বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার, বিষখালী নদীর পানি ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলা পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার, বরগুনা সদর উপজেলা পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটা উপজেলা পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার, বেতাগী উপজেলা পয়েন্টে  ২০ সেন্টিমিটার, আমতলী উপজেলা পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার, ভোলা জেলায় মেঘনা নদীর দৌলতখান উপজেলা পয়েন্টে ৭৪ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিন উপজেলা পয়েন্টে ৯২ সেন্টিমিটার, ভোলা সদর উপজেলার খেয়াঘাট পয়েন্টে তেঁতুলিয়া নদী ৯ সেন্টিমিটার, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার পায়রা নদীর পানি ১২ সেন্টিমিটার, পিরোজপুর সদর উপজেলার বলেশ্বর নদীর পানি ২২ সেন্টিমিটার ও উমেদপুর পয়েন্টে কঁচা নদীর পানি ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, পানি বৃদ্ধিতে বেড়িবাঁধ, মাছের ঘের, ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পানি নেমে গেলে ভাঙন দেখা দেবে।

পিরোজপুরের চরখালী এলাকার বাসিন্দা মো. মনির বলেন, কচা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় নদী তীরের বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। টানা বৃষ্টিতে গরু-ছাগলের খাবারের ব্যবস্থাও করা যাচ্ছে না। সব জায়গা তলিয়ে গেছে। এভাবে বেশি দিন থাকলে ধান চাষের মারাত্মক ক্ষতি হবে।

বরগুনা সদরের ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে গেছে। গাড়ি ওঠানামা করতে পারছে না। বিষখালী নদীর পানির এত স্রোত, এবার নদী ভাঙন অনেককে নিঃস্ব করে দেবে।

বরিশাল নগরীর পলাশপুর এলাকার বাসিন্দা জামাল হোসেন বলেন, পলাশপুর কলোনীতে হাঁটু সমান পানি হয়েছে। ঘরে কেউ থাকতে পারছে না। পানি উঠে তলিয়ে যাচ্ছে। একদিকে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে নদীর পানি উঠে আসছে শহরে। আমরা খুব বিপদের মধ্যে আছি।

ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি ও পটুয়াখালীর স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপকূলের সবগুলো নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। দক্ষিণাঞ্চল প্রতি বর্ষায় প্লাবিত হলেও এবারের মত আকস্মিক পানির ঢল বিগত কয়েক যুগেও দেখেনি কেউ।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *