ফাতেহায়ে ইয়াজদাহম কী?

ফাতেহায়ে ইয়াজদাহম কী?

প্রতি বছরের রবিউস সানী মাসের ১১ তারিখে ফাতেহায়ে ইয়াজদাহম পালন করা হয়। এর প্রচলন খুব একটা না থাকলেও বর্তমানে অনেকেই দিবসটিকে স্মরণ করেন।

প্রতি বছরের রবিউস সানী মাসের ১১ তারিখে ফাতেহায়ে ইয়াজদাহম পালন করা হয়। এর প্রচলন খুব একটা না থাকলেও বর্তমানে অনেকেই দিবসটিকে স্মরণ করেন।

‘ইয়াজদাহম’ শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘একাদশ’। অর্থাৎ রবীউস সানীর এগারো তারিখে কৃত ফাতেহা বা ইসালে সওয়াব মাহফিল। 

এ তারিখে বড় পীর খ্যাত বিশিষ্ট বুজুর্গ ব্যক্তি হজরত আবদুল কাদের জীলানী রহ.-এর ইন্তেকাল হয়েছিল। হিজরি ৫৬১ সনের ১১ রবিউস সানি তিনি ইন্তেকাল করেন বলে জানা যায়। 

মুসলিমদের জন্য হজরত আবদুল কাদির জিলানি রহ.-এর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা একান্ত জরুরি। তবে তাঁর মৃত্যু দিবস পালন অথবা ঘটা করে এ নিয়ে কোনো আয়োজনকে সমর্থন করে না ইসলাম। আলেমরা, এই দিবস পালনকে জায়েজ মনে করেন না। 

কারণ, মনে রাখতে হবে ইসলামের বিধান অনুযায়ী জন্মদিবস ও মৃত্যুদিবস পালনের নিয়ম নেই। মুসলমানদের সব কাজের আদর্শ নবী-রাসূল, খোলাফায়ে রাশেদিন ও সাহাবায়ে কেরাম। কোনো কাজ করার আগে অবশ্যই দেখে নিতে হবে তা কোরআন-সুন্নাহ সমর্থিত কি না। সাহাবায়ে কেরাম তা করেছিন কি না। 

ইসলামি বিধান ও ইতিহাসে জন্মদিবস-মৃত্যুদিবস পালন করার কোনো নজির নেই। আলেম, বুজুর্গানে দ্বীন নিজেদের জন্মদিবস পালন করেননি বা অনুসারীদেরকে জন্মদিবস ও মৃত্যুদিবস পালনের আদেশ করেননি। পরবর্তী যুগের লোকেরা তা উদ্ভাবন করেছে।

ফাতেহায়ে ইয়াজদহম সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যে তারিখে ‘ফাতেহায়ে ইয়াজদাহম’ পালন করা হয় অর্থাৎ এগারো রবিউস সানি তা ঐতিহাসিকভাবে শায়খ আবদুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর মৃত্যুদিবস হিসেবে প্রমাণিত নয়। কারণ তার মৃত্যুর তারিখ নিয়ে ইতিহাসবিদদের মাঝে মতভেদ রয়েছে।

‘তাফুরিহুল খাতির ফি মানাকিবিশ শায়খ আবদুল কাদির’ নামক তার জীবনীগ্রন্থ এ সম্পর্কে কয়েকটি মত উল্লেখ করা হয়েছে। রবিউস সানির নয় তারিখ, দশ তারিখ, সতেরো তারিখ, আঠারো তারিখ, তেরো তারিখ, সাত তারিখ ও এগারো তারিখ। আবার কারও কারও মতে রবিউল আউয়ালের দশ তারিখ। এই আটটি মত উল্লেখ করার পর গ্রন্থকার দশই রবিউস সানিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। -ফাতাওয়া রহিমিয়া: ২/৭৬-৭৭

বিখ্যাত ইতিহাসবিদ আল্লামা হাফেয যাহাবি (রহ.) বলেছেন, ‘তিনি নব্বই বছর বয়সে ৫৬১ হিজরির রবিউস সানির দশ তারিখে ইন্তেকাল করেন।’ -তারিখুল ইসলাম: ২৯/৬০  

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *