পঞ্চগড়ে আন্দোলনে নিহত ৩ পরিবারকে অর্থ সহায়তা দিল জামায়াত

পঞ্চগড়ে আন্দোলনে নিহত ৩ পরিবারকে অর্থ সহায়তা দিল জামায়াত

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় নিহত হয়েছিলেন পঞ্চগড়ের ছাত্রসহ পাঁচজন। তাদের মধ্যে নিহত তিন পরিবারের হাতে নগদ আর্থিক সহায়তা তুলে দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পঞ্চগড় জেলা শাখার আমীর।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় নিহত হয়েছিলেন পঞ্চগড়ের ছাত্রসহ পাঁচজন। তাদের মধ্যে নিহত তিন পরিবারের হাতে নগদ আর্থিক সহায়তা তুলে দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পঞ্চগড় জেলা শাখার আমীর।

সহযোগিতা পাওয়া পরিবারগুলো হচ্ছে জেলার বোদা সাকোয়া ইউনিয়নের বকশিগঞ্জের সুমন ইসলাম (২১), দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের টোকরাভাষা মিরপাড়া গ্রামের সাজু মিয়া (২৬) ও বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের প্রধানহাট এলাকায় বাড়ি আবু সায়েদ।

রোববার (১৮ আগস্ট) বিকেলে জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন নিহত সুমন আলীর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ছুটে যান। সেখানে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বাবা আব্দুল হামিদের হাতে নগদ এক লাখ টাকা তুলে দেন। এর আগে শনিবার (১৭ আগস্ট) দেবীগঞ্জের সাজু মিয়া ও বোদা মাড়েয়া এলাকার আবু সায়েদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সাজু মিয়ার পরিবারকে এক লাখ ও আবু সায়েদের পরিবারকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা তুলে দেন এই জামায়াত নেতা। বাকি নিহত দুই পরিবারকেও সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে গত ৫ আগস্ট ঢাকায় আশুলিয়ায় প্রাণ হারান সুমন আলী। কাজের সুবাদে থাকতেন ঢাকার আশুলিয়ায়। সেদিন মিছিলে গিয়ে প্রাণ হারাতে হয় তাকে।

গাজীপুরের একটি টেক্সটাইল মিলে চাকরি করে পরিবারের চালাতেন সাজু মিয়া। ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের গণ অধিকার পরিষদের অঙ্গসংগঠন শ্রমিক অধিকার পরিষদের পঞ্চগড় জেলা কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলেন। গত ৫ আগস্ট একদফা দাবির আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১১ আগস্ট দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাজু। তিনি দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের টোকরাভাষা মিরপাড়া গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে। ৪ ভাই-বোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন বড়। কোটা সংস্কার ছাত্র আন্দোলনে রংপুরের শহীদ আবু সাঈদের নামের সাথে মিল রেখে তার নবজাতক শিশুর নাম রেখেছিলেন আবু সাঈদ। তার উপার্জনেই চলতো পরিবার।

ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি মুদি দোকান করতেন আবু সায়েদ। ১৯ জুলাই (শুক্রবার) নামাজের পর দোকানের জন্য পলিব্যাগ আনতে সড়কে বের হলে আন্দোলনের মিছিল লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ঘটে। সেই গুলিবর্ষণে তার মাথায় গুলিবিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান তিনি। তার গ্রামের বাড়ি বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের প্রধানহাট এলাকায়। ঢাকা থেকে পাঠানোর টাকায় চলতো গ্রামের বাড়ির পরিবার।

এদিকে অপর দুই নিহতরা হলেন- জেলার সদর উপজেলার চাকলাহাট এলাকার সাব্বির হোসেন সাগর (১৯) এবং দেবীগঞ্জে টেপ্রিগঞ্জ ইউনিয়নের কাদেরের মোর মেলাপাড়া এলাকার শাহাবুল ইসলাম শাওন। ঢাকার আন্দোলনে তারা মারা গেছেন।

নিহত পরিবারগুলোতে অর্থ সহায়তা প্রসঙ্গে পঞ্চগড় জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ছাত্র অভ্যুত্থান আমাদের জাতিকে নতুন একটি স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। এই অর্জনের পিছনে বহু মানুষ জীবন হারিয়েছে। অনেক পরিবার তাদের উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তিটিকে হারিয়েছে। যাদের আত্মত্যাগে আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি তাদের আমরা ভুলতে চাইনা। তাদের পরিবারের পাশে থাকতে চাই। জামায়াতে ইসলামী যেহেতু একটি গণমুখী দায়িত্বশীল সংগঠন, তাই আমরা আমাদের দায়িত্ব থেকে এই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছি। বাকি দুইজনের পরিবারের পাশেও আমরা দাঁড়াব।

এসকে দোয়েল/আরকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *