‘এই নির্দিষ্ট ব্যক্তি দলের দায়িত্বে থাকলে বসুন্ধরা কিংস আর কখনোই পুরুষ, নারী কিংবা বয়সভিত্তিক দলের জন্য খেলোয়াড়দের ছাড়বে না।’—দেশের অন্যতম সেরা কোচ মারুফুল হকের আচরণের প্রতিবাদে এমনই এক কড়া বার্তা দিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) বরাবর পত্র দিয়েছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ক্লাব বসুন্ধরা কিংস। এবার কিংসকে পাল্টা জবাব দিলেন মারুফুল।
‘এই নির্দিষ্ট ব্যক্তি দলের দায়িত্বে থাকলে বসুন্ধরা কিংস আর কখনোই পুরুষ, নারী কিংবা বয়সভিত্তিক দলের জন্য খেলোয়াড়দের ছাড়বে না।’—দেশের অন্যতম সেরা কোচ মারুফুল হকের আচরণের প্রতিবাদে এমনই এক কড়া বার্তা দিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) বরাবর পত্র দিয়েছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ক্লাব বসুন্ধরা কিংস। এবার কিংসকে পাল্টা জবাব দিলেন মারুফুল।
কদিন আগেই অনূর্ধ্ব-২০ সাফ জিতে আসা দলে খেলোয়াড় ছাড় দেয়া নিয়ে দুই পক্ষের এই দ্বন্দ্ব। সেই দলের বর্তমান দেশের ফুটবলের খ্যাতনামা কোচ মারুফুল হক। সবশেষ বয়সভিত্তিক এই দলের ক্যাম্পে অন্যান্য খেলোয়াড়দের পাশাপাশি ছিলেন বসুন্ধরা কিংসের একাধিক মুখ। তবে জাতীয় দলে ডাক পাওয়া খেলোয়াড়দের সবাইকেই এই ক্যাম্পের জন্য ছাড়েনি কিংস।
কিছু খেলোয়াড়ের ইনজুরি প্রবণতা এবং নতুন কোচের অধীনে ট্রেনিং সেশনের জন্য তাদেরকে জাতীয় দলের জন্য ছাড়েনি বসুন্ধরা কিংস। তবে বিষয়টিকে ভালোভাবে নেননি অনূর্ধ্ব-২০ দলের কোচ মারুফুল হক। ক্লাবের চেয়ে জাতীয় দলের স্বার্থকেই আগে দেখার পক্ষপাতী দেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই কোচ। যে কারণে গতকাল রোববার জাতীয় দলের অনুশীলনে বাদ রাখা হয় ক্যাম্পে থাকা বসুন্ধরা কিংসের সকল খেলোয়াড়কে।
এখানেই আপত্তি তুলেছে কিংস। তাদের বক্তব্য এমন এক পদক্ষেপ কখনোই মেনে নেবে না ক্লাবটি। এমনকি মারুফুল হক দায়িত্বে থাকলে দেশের যেকোনো পর্যায়ে খেলোয়াড় ছাড়বে না কিংস এমন কথাও বাফুফেকে দেয়া জানিয়ে দিয়েছে ক্লাবটি।
মারুফুল হকও চুপ থাকেননি। নিজের ফেসবুক ওয়ালে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি। জাতীয় দলের প্রাধান্যই আগে এমন এক বার্তাই দিয়েছেন এই কোচ। বসুন্ধরা কিংসকে খানিক খোঁচাও দিয়েছেন এই কোচ, ‘আশা করি তারা খুব কম সময়েই নিজেদের এই দর্শনে (ক্লাবের প্রাধান্য আগে) বিশ্বের সেরা ক্লাব হয়ে উঠবে। কারণ তাদের হাতে বিশ্বের সবচেয়ে পেশাদার কোচিং স্টাফ আছে।’
এতুটুকুতেই দমে যাননি মারুফুল। তিনি আজ গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছেন। সেখানে নিজের পক্ষে একাধিক যুক্তি দেখিয়েছেন এই কোচ। এমনকি দেশের ফুটবলের স্বার্থে অনূর্ধ্ব-২০ জাতীয় দলের কোচের পদ থেকেও পদত্যাগ করতে রাজি আছেন তিনি বলে জানিয়েছেন।
তিনি বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ‘বসুন্ধরা কিংস তাদের পত্রে উল্লেখ করেছে যে আমি অপশোদার একজন কোচ। আমার প্রশ্ন হল দেশের সর্বোচ্চ পেশাদার ক্লাব দাবীকৃত একটি ক্লাব কিভাবে জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে শুধুমাত্র ক্লাব স্বার্থকে সর্বাগ্রে নিয়ে এসে নিজেদের পেশাদারিত্বের কী প্রমান দিচ্ছেন? এপর্যায়ে আমার কাছে মনে হচ্ছে বসুন্ধরা কিংস জাতীয় স্বার্থকে ভূলন্ঠিত করেছে। আমাদের জাতীয় ও রাজনৈতিক জীবনে পরিবর্তন আসলেও, এধরনের কর্মকান্ড আমাদের ফুটবলের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে বাধাগ্রস্ত করবে।’
‘একটি বয়সভিত্তিক জাতীয় দল সাফ অঞ্চলে শ্রেষ্ঠতা অর্জনের পর যেখানে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড ৭ জন, ঢাকা আবহনী লিঃ ২ জন এবং বাংলাদেশ পুলিশ এফসি ২ জন খেলোয়াড়ের বিষয়ে কোন আপত্তি না জানিয়ে তাদের দলীয় কর্মকর্তারা তাদের খেলোয়াড়দের দেশের পক্ষে জান উজার করে খেলার জন্য উদ্ধুদ্ধ করে যাচ্ছে, সেখানে বসুন্ধরা কিংস কিভাবে তাদের খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে খেলার বিষয়ে মিথ্যা অজুহাত দিয়ে দূরে রাখে?-যোগ করেন তিনি।
এমনকি দেশের ফুটবলের স্বার্থে প্রয়োজনে কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করতেও প্রস্তুত মারুফুল। তিনি বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ‘আমি জানাতে চাই যে, আমি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দলের পদ থেকে সরে গেলে যদি বসুন্ধরা কিংস তাদের সকল খেলোয়াড়কে উক্ত দলে ছাড় দেয়, তবে আমার দেশের ফুটবলের স্বার্থে, এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্যায়ে কোয়ালিফাইয়ের স্বার্থে, আমি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দলের পদ থেকে এই মুহুর্তে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত।’
এইচজেএস