জ্যোতি এবার বললেন— সিনা টান, মাথা উঁচু করে বেরিয়ে এসেছি

জ্যোতি এবার বললেন— সিনা টান, মাথা উঁচু করে বেরিয়ে এসেছি

সহকর্মীদের তোপের মুখে শিল্পকলা একাডেমি ছেড়ে বের হয়ে আসার পর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি বলেছেন, তিনি সিনা টান করে, মাথা উঁচু করেই সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছেন। 

সহকর্মীদের তোপের মুখে শিল্পকলা একাডেমি ছেড়ে বের হয়ে আসার পর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি বলেছেন, তিনি সিনা টান করে, মাথা উঁচু করেই সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছেন। 

মঙ্গলবার মধ্যরাতে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এমনটা জানিয়েছেন তিনি। যদিও এর আগে এক ফেসবুক লাইভে এসে শিল্পকলা একাডেমিতে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য কাঁদতে দেখা যায় তাকে। 

এরপর এদিন রাতেই এক স্ট্যাটাসে অভিনেত্রী জানান, কিছু পত্র-পত্রিকা ও টিভি মিডিয়ায় নানান ভুলভাল তথ্য ছড়াচ্ছে। তাই তুলে ধরলাম ইতিহাস-

‘প্রায় দুইমাস পর আজ অফিসে গেলাম,এই দুইমাস অফিসে যাবার প্রয়োজন ও পরিস্থিতি ছিলো না বলে যাওয়া হয়নি। অফিস করার জন্য মন অস্থির হয়ে ছিল। দুপুর ১টার দিকে একজন নতুন স্টাফ আমার সাথে সেলফি তুলতে চাইলে নিজেও দুটো ছবি তুললাম।

তখনই শুরু হট্টগোল। কানে আসলো অফিসের একটা গ্রুপ আমিসহ অন্য পরিচালকদের অফিস করতে দিবে না। তাই বাজে পরিস্থিতি এড়াতে অফিসের কেউ কেউ দ্রুত চলে যেতে বললো। আমি কখনো পলায়নপর না এবং এমন কোন কিছু জীবনে করি না যে কোথাও থেকে মাথা নীচু করে বের হতে হবে। তাই সিচুয়েশনটা ফেস করতে চাইলাম। 

ততক্ষনে সাংবাদিকরা ফোন করা শুরু করেছে এবং জানতে চাচ্ছে যে আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে কি না। কারণ শিল্পকলা থেকে তাদেরকে এমনটাই জানানো হয়েছে। আমি জানালাম, এমন কিছু আমি জানিনা।

এরপর ২টার দিকে ডিজি মহোদয় মিটিং সেরে দপ্তরে আসলে তার সাথে কথা বলার জন্য রুম থেকে বেরিয়ে লবির দিকে এগিয়ে আসতেই দেখলাম, এক জটলা সহকর্মী আমার দিকে হিংস্র, আক্রমণাত্মক, শকুন চোখে তাকিয়ে আছে। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছে। বুঝলাম, আমাকে সরানোর জন্যই এই আয়োজন। আমি কোনদিকে ভ্রূক্ষেপ না করে ডিজির দিকে এগিয়ে গেলাম। তিনি সবাইকে শান্ত করে অমাকে চলে যেতে বললেন। ডিজির কথা মেনে আমি ব্যাগপত্র নেওয়ার জন্য রুমে ঢুকলাম।

একটু পর সেই লোভী কাকের মতো অফিসাররা আবার আমার রুমের দরজায় এসে ভিড় করলো। তখন সচিব স্যার এসে বললেন দ্রুত বেরিয়ে যেতে। আমিও কাকদের বললাম, আমি পরিচালক থাকবো কী থাকবো না সেটা মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত আসবে। সে অনুযায়ী আমি কাজ করে যাবো। 

এই ফাঁকে কোনো একজন আমার রুমের দরজার লক ভাঙলো। আমি আমার ব্যক্তিগত অল্পকিছু জিনিস যেমন- ডায়েরি, মায়ের ছবি এসব গুছাতে গুছাতে মনে হলো, এরা আমাকে বিপাকে ফেলার জন্য অনেক কিছুই করতে পরে। তাই আমার যা যা সাথে নিলাম তার সবকিছুই তাদের দেখালাম, এমনকি আমার স্যানিটারি প্যাডের প্যাকেট উচিয়েও জিজ্ঞেস করলাম এটা আমি নিতে পারবো কি না।

সচিব স্যার আবার বেরিয়ে যাবার তাগিদ দিলো। আমি স্যারের সাথে বেরিয়ে আসলাম। নীচে এসে আমার বিভাগের উপপরিচালককে সচিব স্যার দায়িত্ব দিলেন গেট অব্দি পৌঁছে দেবার। সিনা টান করে, মাথা উঁচু করে বেরিয়ে এলেও রাস্তায় এসে চোখের পানি আটকে রাখতে পারছিলাম না। কেন তার কারণ জানিনা! 

যারা আতংকগ্রস্থ হয়ে আমার খবর নিয়েছেন, তাদের জন্য ভালোবাসা। আজ আমার প্রত্যেক সাংবাদিক বন্ধুরা যারা ফোন করেছেন বা নক করেছেন, পেশাদারিত্বের সাথে যে সহমর্মিতার পরিচয় দিয়েছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতা।’

যদিও এর আগে ফেসবুক লাইভে জ্যোতি বলেন, শিল্পকলা একাডেমিতে তাকে অপমান করা হয়েছে। অভিনেত্রীর কথায়, ‘এতবছর ধরে আমি অভিনয় করছি। কখনো দেশ ছেড়ে বাহিরে চলে যাওয়ার কথাও চিন্তা করিনি। তবুও এই অপমান কি আমার প্রাপ্য ছিল? কোনো দলের সমর্থক ছিলাম বলে কি দেশটা আমার নয়? আমি তাহলে কোথায় যাব? এই প্রশ্ন আপনাদের কাছে রেখে গেলাম।’

এনএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *