ঋণখেলাপি হয়েও পদে বহাল এন‌সি‌সি ব্যাংকের ৪ পরিচালক

ঋণখেলাপি হয়েও পদে বহাল এন‌সি‌সি ব্যাংকের ৪ পরিচালক

বেসরকা‌রি এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার ও তার পিতা ব্যাংকটির পরিচালক আবদুল আউয়াল ১০‌টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করছেন না। এরই মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে তাদের ঋণ। যদিও ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, ঋণ খেলাপি কেউ ব্যাংকের পরিচালক হতে পারেন না।

বেসরকা‌রি এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার ও তার পিতা ব্যাংকটির পরিচালক আবদুল আউয়াল ১০‌টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করছেন না। এরই মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে তাদের ঋণ। যদিও ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, ঋণ খেলাপি কেউ ব্যাংকের পরিচালক হতে পারেন না।

আবার কেউ পরিচালক পদে থাকাকালীন সময় ঋণ খেলাপি চিহ্নিত হলে রয়েছে অপসারণের বিধান। একই অবস্থা ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলা হোসাইন ও পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেমেরও। তারাও বি‌ভিন্ন ব্যাংকে ঋণখেলাপি। আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন দেখেও নীরব ভূমিকা পালন করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সম্প্রতি এসব পরিচালকদের বিষয়ে কয়েকটি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযোগও করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার আট ব্যাংক ও দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি। তার বাবা ও এনসিসি ব্যাংকের পরিচালক আবদুল আউয়ালের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাদের প্রাইম গ্রুপের ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলা হোসাইন ও পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেমও ঋণখেলাপি।

ব্যাংক‌টির ৪ পরিচালকের ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ায় এনসিসি ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়ার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বন্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে এনসিসি ব্যাংকের এমডিকে জানানো হয়, ব্যাংকটির চার পরিচালকের (আবুল বাশার, আবদুল আউয়াল, এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেম ও সোহেলা হোসাইন) ঋণ খেলাপি থাকায় এই বন্ড অনুমোদন দেওয়া গেলো না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যের ভিত্তিতে বিএসইসি এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। নীরব ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, এনসিসি ব্যাংকের ঋণ খেলাপি পরিচালকদের বিষয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আইন অনুযায়ী শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জানা গেছে, আবুল বাশার তিন বছর ধরে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও প্রাইম গ্রুপের ডিএমডি। তার পিতা আবদুল আউয়াল গ্রুপটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আট ব্যাংক ও দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাদের ঋণ ১ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৭ ধারায় নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ধারায় নোটিশ দেওয়ার নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর পরিচালক পদ শূন্য হয়ে যাওয়ার নিয়ম রয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ধলেশ্বরী ওয়ার্ল্ড ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি বেনামি প্রতিষ্ঠান খুলে ৫০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করে প্রাইম গ্রুপ। পরে অন্য পরিচালকদের বাধায় তা আটকে যায়। আবার অনিয়মের আশঙ্কায় ৪০০ কোটি টাকা খরচ করে বিদেশ থেকে কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার (সিবিএস) কেনাও আটকে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এদিকে ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলা হোসাইন মীর আকতার হোসাইন লিমিটেডের চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি মীর সিমেন্ট, মীর রিয়েল এস্টেট ও মীর কংক্রিট প্রোডাক্টস লিমিটেডের প্রধান। এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণও খেলাপি হয়ে পড়েছে। ব্যাংকটির অপর পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেম আবদুল মোনেম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী। এই প্রতিষ্ঠানের ঋণও খেলাপি হয়ে পড়েছে।

ঋণখেলাপির বিষয়ে জানতে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আবুল বাশারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তি‌নি ফোন ধরেননি।

এসআই/এসকেডি

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *