বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে গত ২৫ জুলাই চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি চেয়ে অব্যাহতিপত্র জমা দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল করিম। তবে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সেই অব্যাহতিপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে গত ২৫ জুলাই চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি চেয়ে অব্যাহতিপত্র জমা দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল করিম। তবে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সেই অব্যাহতিপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) অব্যাহতিপত্রটি প্রত্যাহারের আবেদনের বিষয়টি জাহিদুল করিম নিজেই নিশ্চিত করেছেন। গত ৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (রুটিন দায়িত্ব) এবিএম আজিজুর রহমান বরাবর ই-মেইলের মাধ্যমে আবেদনপত্রটি পাঠিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
জাহিদুল করিম বলেন, একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে আমি অব্যাহতিপত্রটি জমা দিয়েছিলাম। সারা দেশে আমিই প্রথম শিক্ষক যে এই অন্যায়ের প্রতিবাদে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতির আবেদন করেছিলাম। এতে অনেক শিক্ষক অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, অনেক শিক্ষার্থীও অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তবে এখন যেহেতু দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে, আর বিভিন্ন শিক্ষক এবং আমার বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাকে প্রতিনিয়ত অনুরোধ জানাচ্ছেন। তারা আমার মতো প্রতিবাদী শিক্ষক বিভাগে ফিরে পেতে চান। সবদিক বিবেচনা করে অব্যাহতিপত্রটি প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর দেওয়া আবেদনপত্রে জাহিদুল করিম বলেন, আমি বিগত প্রায় ১৪ বছর ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষকতা করছি। দেশের সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদাসীনতা এবং শিক্ষকদের দলীয় মনোভাব আমাকে অনেক ব্যথিত করেছিল। আমি সবসময় সত্য এবং ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেছি এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সর্বদা পাশে থেকেছি। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের একটি ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরকারের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর মূল্যবান জীবন দিতে হয়েছে। সরকার চাইলে দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিতে পারতো, তাহলে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটতো না । উক্ত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে চাকরি হতে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি ঘোষণা করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, আমি জানতে পেরেছি, আমার প্রেরিত স্বেচ্ছায় অব্যাহতিপত্রটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পেয়েছিল কিন্তু আমাকে চাকরি হতে অব্যাহতি দেয়নি। বর্তমানে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে এবং আমাদের প্রিয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমি আমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি। আমি শিক্ষার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাই বিধায় আমার স্বেচ্ছায় প্রেরিত অব্যাহতিপত্রটি প্রত্যাহার করছি।
মেহেরব হোসেন/এএমকে