জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, সাহস থাকলে এখন দেশে এসে রাজনীতি করেন। দেশের মানুষের ভালোবাসা দিয়ে রাজনীতি করতে হয়, লুটপাট করে বিদেশে অর্থপাচার করে রাজনীতি করা যায় না।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, সাহস থাকলে এখন দেশে এসে রাজনীতি করেন। দেশের মানুষের ভালোবাসা দিয়ে রাজনীতি করতে হয়, লুটপাট করে বিদেশে অর্থপাচার করে রাজনীতি করা যায় না।
রোববার (১১ আগস্ট) রাজধানীর পশ্চিম সানারপাড়া, ৬৬ নম্বর ওয়ার্ড, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মুর্তজা আলী স্কুলের ছাত্র শহীদ মাহমুদুল হাসান জয়ের বাসায় জামায়াত নেতারা তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন তিনি।
শহীদ মাহমুদুল হাসান জয়ের বাসায় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আরও দুই শহীদ পরিবারের সদস্যরা। তারা হলেন, কুতুবখালী মাদ্রাসার ছাত্র শহীদ জিহাদ হোসেনের বাবা মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন। ব্র্যাক স্কুলের ছাত্র শহীদ শাহাদাত হোসেন শাওনের বাবা বাসির আলম।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসেন খান, ডেমরা উত্তর জামায়াতের আমির মাওলানা মিজানুর রহমান, ডেমরা পূর্ব জামায়াতের আমির মোজাফফর হোসেন, ডেমরা দক্ষিণ জামায়াতের আমির মির্জা হেলাল উদ্দিন, ডেমরা মধ্য জামায়াতের আমির মুহাম্মদ আলী, যাত্রাবাড়ী পূর্ব থানা আমির শাজাহান খান প্রমুখ।
এসময় জামায়াত নেতারা শহীদ পরিবারকে সান্ত্বনা দেন, ধৈর্য ধারণ করার পরামর্শ দেন এবং শহীদের প্রতি পরিবারকে ১ লাখ করে মোট ৩ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা করেন।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মানুষের ওপরে গণহত্যা চালিয়ে রাজনীতি করা যায় না, মানুষের ওপরে জুলুম করে রাজনীতি করা যায় না। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা মন্দির পাহারা দিচ্ছে। সবসময় আমরা হিন্দুদের পাশে থাকব। হিন্দু ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের নিকট পবিত্র আমানত; আমরা জীবন দিয়ে হলেও তাদের রক্ষা করব।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন বলেন, আমাদের চোখের সামনে আমাদের ছাত্র ভাইদের নির্বিচারে গুলি করে শহীদ করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী ও পুলিশ। অনেক রক্ত ও শহীদের বিনিময়ে আমরা নতুন করে স্বাধীনতা লাভ করি। আমাদের নতুন করে এই অর্জন করা স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে, তাদের মা-বাবা এ দেশের গর্বিত মা-বাবা। জালিম স্বৈরাচার পতনের মধ্য দিয়ে আমরা এখন দেশে সুশাসন ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে পারব ইনশাআল্লাহ। আমরা আপনাদের (শহীদ পরিবারের) খোঁজখবর রাখব। আপনারা আমাদের পরিবারের সদস্য।
তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক সেনাবাহিনী ধৈর্য ধরেছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন ছদ্মনাম নিয়ে হিন্দুদের ওপরে হামলা চালাচ্ছে। আওয়ামী হানাদার সন্ত্রাসীদের ধরে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। এ দেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়, সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। আপনারা কোনো তথ্য পেলে সেনাবাহিনী ও জামায়াতের ভাইদের খবর দেবেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে আপনারা সহযোগিতা করবেন, যাতে দেশে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়।
অধ্যাপক মোকাররম হোসেন খান বলেন, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। সাম্প্রদায়িক হামলার মিথ্যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আমরা দেশ প্রেমিক জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী হানাদারদের সব চক্রান্ত বন্ধ করে দেব।
নেতারা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। নেতারা প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার এবং সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান।
জেইউ/এসএসএইচ