ঢাবি অধ্যাপক আব্দুর রশিদের অব্যাহতির দাবিতে বিক্ষোভ

ঢাবি অধ্যাপক আব্দুর রশিদের অব্যাহতির দাবিতে বিক্ষোভ

নৈতিক পদস্খলন, অ্যাকাডেমিক চৌর্যবৃত্তি, শিক্ষার্থী নিপীড়ন, দুর্নীতি ও অনিয়মসহ নানান অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক ভিসি ড. মোহাম্মদ আব্দুর রশিদের স্থায়ী অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে তার বিরুদ্ধে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। 

নৈতিক পদস্খলন, অ্যাকাডেমিক চৌর্যবৃত্তি, শিক্ষার্থী নিপীড়ন, দুর্নীতি ও অনিয়মসহ নানান অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক ভিসি ড. মোহাম্মদ আব্দুর রশিদের স্থায়ী অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে তার বিরুদ্ধে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। 

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের নিকট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রশিদের নৈতিক ও চারিত্রিক স্খলন, অ্যাকাডেমিক চৌর্যবৃত্তি, নিপীড়ন, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ শিরোনামে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-

১. উপস্থাপিত দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, বৈষম্য, নিপীড়ন ও অনিয়মের সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে অবিলম্বে এই অধ্যাপককে চাকরিচ্যুত করে ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

২. শিক্ষক নিয়োগে ড. আব্দুর রশিদের দুর্নীতির প্রশ্রয়ে ও রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে নিয়োগকৃত সব শিক্ষক ও কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল করে বৈষম্যের শিকার হওয়া যোগ্য প্রার্থীদেরকে নিয়োগ দিতে হবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ড. আব্দুর রশিদের একাধিক কর্মকাণ্ড আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও ধর্মীয় নীতিমালা এবং সুযোগের সমতা নিশ্চিতকরণের নীতির সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। তার বিরুদ্ধে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে শারীরিক নির্যাতন ও মানসিক হেনস্তা, প্রেজেন্টেশন ক্লাসে ও ভাইভা বোর্ডে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ, অ্যাকাডেমিক ক্ষতিসাধন, চাকরির ভাইভায় পক্ষপাতিত্ব, স্বজনপ্রীতি ও অঞ্চলপ্রীতির অভিযোগ এসেছে।

এছাড়াও ড. আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে সরাসরি যুক্ত থেকে রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক অযোগ্য প্রার্থীদের পক্ষপাতদুষ্টভাবে পদায়ন, অ্যাকাডেমিক চৌর্যবৃত্তি, সম্মানিত শিক্ষকদেরকে হয়রানি, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অবমানানা ও বিকৃতিসহ ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালীন বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারি, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারিসহ নানাবিধ অভিযোগ নিয়ে দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন মূলধারার জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ইউজিসি কর্তৃক তদন্ত কমিশন গঠন করা হলেও তা রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে স্থগিত রেখেছেন। সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে স্বৈরাচারের গুম, খুন, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও অরাজকতাকে নীরব সমর্থন দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের চাপে তিনি ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। 

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, বিগত দিনে তার বিতর্কিত ও অশিক্ষকসুলভ আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে মনে করছে তার এসব কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের ইসলামী শিক্ষা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রের সুনাম ও নৈতিক অবস্থানের প্রতি হুমকিস্বরূপ। তাই তার অব্যাহতির দাবিতে আমরা ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা গত ১৬ আগস্ট থেকে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। 

আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে এই অভিযোগপত্রের স্পষ্ট জবাব বিবৃতি হিসেবে না দিলে এবং আমাদের দাবিসমূহ আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়বদ্ধতার ওপর আস্থা হারাবো।

কেএইচ/পিএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *