এক বছরের মধ্যে লেবাননে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান হামলা ইসরায়েলের

এক বছরের মধ্যে লেবাননে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান হামলা ইসরায়েলের

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। তারবিহীন যোগাযোগের যন্ত্র পেজার ও রেডিও বিস্ফোরণের পর দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে এই হামলা চালায় ইসরায়েল।

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। তারবিহীন যোগাযোগের যন্ত্র পেজার ও রেডিও বিস্ফোরণের পর দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে এই হামলা চালায় ইসরায়েল।

সর্বশেষ এই হামলাকে গত প্রায় এক বছরের মধ্যে লেবাননে চালানো ইসরায়েলের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের খবর সামনে আসেনি। এছাড়া উত্তেজনা ও সংঘাত আরও না বাড়িয়ে সংযমের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত প্রায় এক বছরের যুদ্ধের মধ্যে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দক্ষিণ লেবাননে সবচেয়ে তীব্র হামলা চালিয়েছে। পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে সংযমের আহ্বানের মধ্যে হওয়া এই হামলা ইসরায়েল এবং লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘর্ষকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

হোয়াইট হাউস বলেছে, সংকটের কূটনৈতিক সমাধান অর্জন সম্ভব এবং সেটিই জরুরি। এছাড়া ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটেনও। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়ের এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, সংঘাত ও উত্তেজনার ‘সম্ভাব্য বৃদ্ধির বিষয়ে ভীত এবং উদ্বিগ্ন’ যুক্তরাষ্ট্র।

রয়টার্স বলছে, হিজবুল্লাহর যোগাযোগের যন্ত্রে বিস্ফোরক বসিয়ে ইসরায়েলের সমন্বিত হামলায় দু’দিনে লেবাননে অন্তত ৩৭ জন নিহত ও আরও তিন হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। মূলত যোগাযোগের যন্ত্রে ইসরায়েলের হামলার পর লেবাননজুড়ে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।

দেশটির অনেক নাগরিক এখন বিস্ফোরণের আশঙ্কায় তাদের মোবাইল ফোন থেকেও দূরে থাকছেন। এমন অবস্থায় লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে এই বিমান হামলার ঘটনা ঘটল।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চালানো এই অভিযানে তাদের যুদ্ধবিমানগুলো দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ লেবাননে শত শত মাল্টিপল রকেট-লঞ্চার ব্যারেলে আঘাত করেছে যেগুলো কিছুক্ষণের মধ্যেই ইসরায়েলের দিকে নিক্ষেপ করা হতো।

লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা এনএনএ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার পর দক্ষিণ লেবাননে ৫২টিরও বেশি হামলা চালানো হয়েছে। লেবাননের তিনটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের অক্টোবরে সংঘাত শুরু হওয়ার পর এটিই সবচেয়ে তীব্র বিমান হামলা।

হামলার ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী হিজবুল্লাহর ওপরে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে এবং বলেছে, বৃহস্পতিবার সারাদিনে তাদের চালানো হামলায় প্রায় ১০০টি রকেট লঞ্চার এবং দক্ষিণ লেবাননে অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এক টিভি ভাষণে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ বলেছেন, গত মঙ্গলবার এবং বুধবার ডিভাইস বিস্ফোরণের ঘটনা ‘সমস্ত রেড লাইন অতিক্রম করেছে’। তিনি বলেছেন, ‘সমস্ত নিয়ন্ত্রণ, আইন এবং নৈতিকতার বাইরে চলে গেছে শত্রু। এই আক্রমণগুলোকে যুদ্ধাপরাধ বা যুদ্ধ ঘোষণা হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।’

পেজার এবং রেডিও বিস্ফোরণের বিষয়ে ইসরায়েল সরাসরি মন্তব্য করেনি। যদিও নিরাপত্তা সূত্রগুলো বলছে, হামলাটি সম্ভবত ইসরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে।

এছাড়া জাতিসংঘে লেবাননের মিশন বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া এক চিঠিতে বলেছে, ইসরায়েল ইলেকট্রনিক বার্তা ব্যবহার করে এবং লেবাননে পৌঁছানোর আগে এগুলোতে বিস্ফোরক রাখার মাধ্যমে ডিভাইসগুলোর বিস্ফোরণের জন্য দায়ী।

লেবাননের এই বিস্ফোরণ নিয়ে শুক্রবার ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি ইসরায়েলের ‘আগ্রাসন’ ও ‘প্রযুক্তিগত যুদ্ধ’ বন্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে নিরাপত্তা পরিষদকে আহ্বান জানিয়েছেন।

টিএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *