ইউজিসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

ইউজিসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থাকা প্রফেসর মুহাম্মদ আলমগীরকে অপসারণের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী পরিষদ। এর মধ্যে পদত্যাগ না করলে ইউজিসি ঘেরাও করার হুমকি দিয়েছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থাকা প্রফেসর মুহাম্মদ আলমগীরকে অপসারণের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী পরিষদ। এর মধ্যে পদত্যাগ না করলে ইউজিসি ঘেরাও করার হুমকি দিয়েছেন তারা।

রোববার সকালে আগারগাঁও ইউজিসির সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। তারা শিক্ষা উপদেষ্টা ও ইউজিসির সচিবের কাছে তাকে অপসারণের জন্য এ সময় বেঁধে দেন। প্রফেসর আলমগীর ইউজিসির সদস্য। বর্তমানে তিনি চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন।

আন্দোলনকারীরা বলেন, আলমগীর একজন স্বেচ্ছাচারী, দুর্নীতিবাজ, স্বৈরাচারের দোসর। তাকে ইউজিসির চেয়ারম্যানের দায়িত্বসহ সদস্য পদ থেকে অপসারণ এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে অপসারণ করা না হলে ছাত্র-জনতা সম্মিলিতভাবে তার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে। এক্ষেত্রে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায় দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে।

মানববন্ধনে প্রকৌশলীরা জানান,  আলমগীর ২০১০থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২ মেয়াদে ৮ বছর কুয়েটের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে কুয়েটের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশকে ধ্বংস করে দেয়া হয়। ক্যাম্পাসকে নোংরা রাজনীতি ও সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করা হয়। তার দায়িত্ব পালনের শুরু থেকেই ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখার জন্য তিনি কুয়েটে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করেন এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিতে থাকেন। তার পৃষ্ঠপোষকতা ছাত্রলীগ কুয়েট ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।

মোখলেসুর রহমান নামে একজন প্রকৌশলী বলেন, কুয়েটে কখনো মদ জুয়ার কথা চিন্তাই করা যেত না। কিন্তু আলমগীরের সময়ে এই অনৈতিক কাজকে আশ্রয় ও প্রশয় দেওয়া হয়। এমনকি অতিরিক্ত মদ্যপান করে ছাত্রলীগ সভাপতির মৃত্যুবরণের পর শিক্ষক ও সাধারণ ছাত্রদের বিরোধিতা সত্ত্বেও ওই ছাত্রের স্মৃতি রক্ষার্থে ক্যাম্পাসে স্মৃতি ফলক তৈরি করা হয়।

তিনি জানান, তার সময়ে তার প্রত্যক্ষ মদদে ও যোগসাজশে বহু শিক্ষক ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের দ্বারা অসম্মান, অপমান, নির্যাতন ও মারধরের শিকার হয়। ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের শিকার হয়ে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে ড. আরিফ এবং ড. সেলিমের মতো শিক্ষককে অকালে মৃত্যুবরণ করতে হয়।

ফাহিদ নামে কুয়েটের সাবেক একজন ছাত্র বলেন, তার সময়ে বহিরাগত ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের নিপীড়ন, নির্যাতনে অতিষ্ঠ সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদ, প্রতিরোধ গড়ে তুললে ক্যাম্পাস অশান্ত ও অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে কয়েকবার কুয়েট ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

তারা জানান, তিনি প্রতিনিয়ত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছেন এবং আন্দোলন দমনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। তারই ইন্ধন ও ষড়যন্ত্রের নীল নকশায় খুলনায় বহু আন্দোলনকারী ছাত্র জনতা ছাত্রলীগ, যুবলীগ সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়েছে এবং আহত হয়েছে। 

উল্লেখ্য, তিনি ফ্যাসিস্ট হাসিনার সঙ্গে ৪ আগস্ট গণভবনে উপস্থিত ছিলেন।

ইউজিসির সদস্য হিসেবেও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, নিয়োগ, পদোন্নতি, তদারকি, পরিদর্শন, তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা, পরীক্ষার ফলাফলের স্বচ্ছতা বিধান, সার্টিফিকেট ব্যবস্থাপনা, পরীক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ, উন্নয়ন প্রকল্পের তহবিল ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, অস্বচ্ছতা, পক্ষপাতিত্ব ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

এনএম/এসকেডি

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *